ধর্ম

ইবাদতের প্রকৃত স্বাদ লাভ হয় ইতেকাফে

ইতেকাফ আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আমল। এ কারণেই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আজীবন রমজানের শেষ দশকে ইতেকাফ করেছেন। সর্বশেষ বার তিনি ২০ দিন ইতেকাফ করেন। ইতেকাফের মাধ্যমে মুমিন বান্দা ইবাদতের প্রকৃত স্বাদ লাভ করে থাকে।

Advertisement

আল্লাহ তাআলার ইবাদতে নিজেকে একনিষ্ঠভাবে আত্মনিয়োগ করার অন্যতম মাধ্যমও এ ইতেকাফ। কারণ দুনিয়ার যাবতীয় ব্যস্ততা থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে মসজিদে অথবা ঘরের নামাজের স্থান বা নির্ধারিত একটি আবদ্ধ স্থানে নিজেকে ইবাদতে শামিল রাখাই হলো ইতেকাফ।

যেখানে দুনিয়ার বিষয়াদি যেমন- চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবার পরিচালনার মতো কোনো কাজই করা যাবে না। আর তা নিয়ে চিন্তা-ফিকির করলে ইতেকাফ ছুটে যাবে। ইতেকাফে শুধুমাত্র অজু, গোসল, খাওয়া-দাওয়া, বিশ্রাম ও হাজতপূরণ ব্যতিত অন্য কোনো কাজে সময় ব্যয় করার কোনো সুযোগ নেই।

আরও পড়ুন > রোজায় ইফতার বিতরণ ও আর্থিক অনুদানের তাৎপর্য

Advertisement

ইতেকাফে বসে যারা ইবাদত-বন্দেগির পরিবর্তে অন্তরে পেরেশানি পোষণ করবে, মসজিদের মধ্যে হাটাহাটি করবে; তারা এ ইতেকাফে ইবাদতের বা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের প্রকৃত স্বাদ লাভ করতে পারবে না।

কেননা ইতেকাফে বসে ইবাদতের প্রকৃত স্বাদ লাভে মূল বিষয় হলো- ‘সৃষ্টির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে স্রষ্টার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা। ইতেকাফের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে আল্লাহর সম্পর্ক যতই গভীর তথা অন্তরঙ্গ হতে থাকবে; ইতেকাফকারী ব্যক্তি ততই ইবাদত ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের প্রকৃত স্বাদ পেতে থাকবে। যা বান্দাকে আল্লাহ তাআলার কাছাকাছি নিয়ে যাবে।’

সুতরাং ইতেকাফে বসে ইবাদত-বন্দেগি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের প্রকৃত স্বাদ পেতে হলে প্রথমেই দুনিয়াবি সব ধরনের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে- অনর্থক অশ্লীল ও বেহুদা কথা-বার্তা, পারিবারিক, ব্যবসায়িক, বাণিজ্যিক সব সম্পর্ক ছিন্ন করা।

আরও পড়ুন > সারারাত নামাজের সাওয়াব লাভের সহজ উপায়

Advertisement

ইতেকাফকারীদের সতর্ক থাকা জরুরি ইতেকাফে বসে খোশ-গল্প করে যেন গুরুত্ব ও ফজিলতপূর্ণ সময় অপচয় না হয়। বরং বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করা, জিকির-আজকার, তাসবিহ-তাহলিল, নফল নামাজ, মাসনুন দোয়া-দরূদ ও তাওবা-ইসতেগফারে সময় অতিবাহিত করা জরুরি।

আর যারা ইলমে দ্বীন, কুরআন এবং হাদিসের জ্ঞান রাখেন, তাদের জন্য কুরআন এবং হাদিস অধ্যয়ন করায় রয়েছে অনেক ফজিলত। বরং তারা ইতেকাফে অবস্থানকারী ব্যক্তিদের মাঝে কুরআনে ভাব ও বিধান তুলে ধরা জরুরি ও বড় সাওয়াবের কাজ।

বিশেষ করে ইতেকাফকালীন সময়ে রাত জেগে কিয়ামুর রমজান তথা বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সেতুবন্ধনের অন্যতম মাধ্যম হলো একনিষ্ঠতার সঙ্গে গভীর রাতে নামাজ আদায় করা।

আরও পড়ুন > সালাতুত তাসবিহ যেভাবে পড়তে বলেছেন প্রিয়নবি

একমাত্র নামাজের মাধ্যমেই জরুরি। কারণ নামাজই আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সেতুবন্ধনের প্রধান মাধ্যম। তাই ই’তিকাফকালীন সময়ে দিন ও রাত সব ধরনের নামাজে অতিবাহিত করার মাধ্যমেই মুমিন মুসলমান ই’তিকাফের প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন করে মাওলার নৈকট্য অর্জন সফল হয়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইতেকাফে যথাযথ ইবাদত-বন্দেগি করার মাধ্যমে তার নৈকট্য অর্জনের প্রকৃত স্বাদ ও নেয়ামত উপভোগ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর