স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় নড়াইলে দায়ের করা মানহানি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির দিন আগামী ৫ জুন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
Advertisement
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার জামিনের আবেদন করলে জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল আহাদ শেখ এ আদেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার চাপাইল গ্রামের রায়হান ফারুকী ইমাম বাদী হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নামে নড়াইল সদর আদালতে মানহানি মামলা করেন।
এ মামলায় ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট খালেদা জিয়াকে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। নির্ধারিত সময়ে খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরা না হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এর আগে ওই বছরের ২৫ জুলাই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সমন জারি করেন একই আদালত।
Advertisement
গত ১৬ এপ্রিল খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন করা হলে পরবর্তী দিন ৮ মে শুনানির জন্য ধার্য করেন আদালত। সেইদিন জামিন মঞ্জুর, নামঞ্জুর কোনোটাই হয়নি বলে জানান অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার।
গত ২৮ মে বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলাটি ‘নট প্রেস রিজেক্ট’ বলে খারিজ করে দেন।
২৮ মে আদালত বলেন, দুটি মানহানির মামলায় তো আপনারা জেলা জজ আদালতে না গিয়ে হাইকোর্টে এসেছেন। মামলাটি নিম্ন আদালতে শুনানি করে আসুন। এর প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার মামলার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বুধবার আদালতে জামিন আবেদন করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে বেগম খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে স্বাধীনতাযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে বলে মন্তব্য করেন।
Advertisement
একই সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে তাকে ইঙ্গিত করে খালেদা জিয়া বলেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) স্বাধীনতা চাননি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ চাননি। তার এই বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদপত্র ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হয়।
বিষয়টি নিয়ে নড়াইলের চাপাইল গ্রামের রায়হান ফারুকী ইমাম বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নড়াইল সদর আমলী আদালতে মামলা করেন।
পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যের অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নামে নড়াইলের আদালতে ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে আরও একটি মানহানি মামলা করা হয়।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী সম্পর্কে বিতর্কিত বক্তব্যের অভিযোগে ওইদিনই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নামেও মানহানি মামলা করা হয়। শহীদ শেখ জামাল জাতীয় স্মৃতি পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কালিয়ার শেখ আশিক বিল্লাহ মামলা দুটি করেন।
হাফিজুল নিলু/এএম/জেআইএম