দিন শেষে তার নামের পাশে ৪৪ রানে ৬ উইকেট। ৬ ওভারের প্রথম স্পেলে ২২ রানে উইকেটশূন্য। আর পরের ৩.৫ ওভারে সেই ২২ রানে ৬ উইকেট শিকার। যার চারটি আবার শেষ ওভারে পরপর চার বলে।
Advertisement
প্রায় দেড় যুগের ক্যারিয়ারে যেকোনো পর্যায়ে এটা তার প্রথম হ্যাট্রিক। ওই অবিস্মরণীয় স্পেলে আবাহনীর জয় ১১ রানে।
ওপরের এই তথ্যগুলো এখন সারা দেশে ভাইরাল হয়ে গেছে। কিন্তু জানেন কি পড়ন্ত বিকেলে বল হাতে অমন বিধ্বংসী হয়ে ওঠা মাশরাফির দিন শুরু হয়েছিল ঘুম দিয়ে!
ঘড়ির কাঁটা সকাল সাড়ে ৯টা ছোঁয়ার আগে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে আবাহনীর ড্রেসিং রুমে এক ঘণ্টার মতো ঘুমিয়েছিলেন নড়াইল এক্সপ্রেস।
Advertisement
ড্রেসিং রুম কিন্তু শুধুই রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা ক্রিকেটার আর কোচিং স্টাফদের বসার জায়গা নয়। পাশাপাশি মাঠে নামার আগে শারীরিক, মানসিক ও ক্রিকেটীয় প্রস্তুতির অনুকূলতম ক্ষেত্রও নয়। খালি চোখে তাই মনে হয়। সবাই এটাই ভাবেন। তাই মনে করেন।
জানেন কি ড্রেসিং রুম ঘুমানোরও জায়গা! অনেক ক্রিকেটারের অভ্যাস ড্রেসিং রুমে ঘুমানো। যেহেতু পাঁচদিনের খেলা, তাই টেস্টে নিচের দিকের ব্যাটসম্যানদের ঘুমিয়ে নেয়ার অভ্যাস অনেক পুরনো। আবার নিজ দল প্রথমে ব্যাট করলে কোনো কোনো সময় ওই দলের বোলারদের কেউ কেউ ঘণ্টাখানেক ঘুমিয়ে নেন।
কিন্তু খেলা চলাকালীন মাশরাফিকে ঘুমাতে কে দেখেছে কবে? নিশ্চয়ই উত্তর আসবে, কেউ না। কখনো না। এটুকু শুনে হয়তো ভাবছেন, তার মতো এমন ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ ও শতভাগ নিবেদিতপ্রাণ ক্রিকেটার আবার সাজঘরে ঘুমাতে পারেন নাকি?
শুনলে আশ্চর্য হবেন, আজ সকালেই ঘুমিয়েছেন দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা। সকালে টস জিতে আবাহনী অধিনায়ক নাসির ব্যাট বেছে নেয়ার কিছুক্ষণ পর ঘুমিয়ে পড়লেন মাশরাফি। ঘণ্টাখানেক ঘুমিয়ে সতজে আর তরতাজা হলেন। তারপর ড্রেসিং রুমে বসে দেখলেন ছোট ভাই নাজমুল হোসেন শান্তর নয়ন জুড়োনো ব্যাটিং।
Advertisement
একঝাঁক উইলোবাজের দল আবাহনী। এনামুল হক বিজয়, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, নাসির হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর মোহাম্মদ মিঠুন।
শেষ ওভার পর্যন্ত ক্রিজে নাজমুল হোসেন শান্ত আর মিঠুন। ভেবেছিলেন হয়তো তারাই শেষ করে ফিরবেন। কিন্তু চার বল আগে আউট হলেন মিঠুন। কী আর করা? নামতে হলো চার বল আগে।
আর নামতে হবে না ভেবে হয়তো প্যাড, গ্লাভস খুলে ফেলেছিলেন- তাই নামতে দেরি হলো। আম্পায়ারা স্কোরারদের সঙ্গে টাইম আউটের কথাও বলাবলি করেছিলেন।
পরে নামলেন। নেমে সুবিধা হলো না। তিন বলে এক রান করে পেসার শফিউলের খাটো লেন্থের বলে পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কোয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরা। সেই মাশরাফি পড়ন্ত বিকেলে বল হাতে দুরন্ত; দুর্বার।
এআরবি/বিএ