দেশজুড়ে

থার্টি ফার্স্ট নাইটে পর্যটকে মুখরিত কুয়াকাটা সৈকত

রোববার শেষ বিকেলে শীতের হালকা কুয়াশায় পশ্চিমাকাশে ডুবে গেছে সূর্য। ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে বিদায় নেবে ২০১৭ সাল। স্মৃতি হয়ে যাবে ৩৬৫ দিন, জানুযারি থেকে ডিসেম্বর ১২টি মাস, ২০১৭ সাল। সফলতা-ব্যর্থতার হিসাব ভুলে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশা সকলের। বিদায় বেদনার মধ্যে প্রভাতে পূর্বাকাশে নতুন সূর্য ওঠার প্রতীক্ষা। হবে ২০১৮ সালের শুভ সূচনা। ৩১ ডিসেম্বর রাতে ২০১৮ সালকে স্বাগত জানাতে পালন করা হবে থার্টি ফার্স্ট নাইট। নাইটটি উদযাপন উপলক্ষে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে নেমেছে লক্ষাধিক পর্যটক।

Advertisement

পর্যটন নগরী সাগরকন্যা কুয়াকাটায় শীতের হিমেল গোধূলী লগ্নে বছরের শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় আর নতুন বছরের প্রভাতের সূর্যোদয়কে স্বাগত জানিয়েছে লক্ষাধিক পর্যটক। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও পর্যটকদের এমন ভিড়ে মুখরিত কুয়কাটা সৈকতসহ সব দর্শনীয় স্থান। খালি নেই হোটেল-মোটেল-কটেজের কক্ষ। পর্যটকদের আতিথেয়তা দিতে ব্যস্ত সময় পার করছে পর্যটন ব্যবসায়ী আর টুরিস্ট ও নৌ-পুলিশ।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটা। মনোরম নৈসর্গিক দৃশ্যের হাতছানি ভ্রমণ বিলাসী মানুষকে বারবার টেনে আনে সমুদ্রের কাছে। প্রতিবছর শীতের আগমনে পর্যটন মৌসুমের শুরু থেকে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগরকন্যা কুয়কাটা। বিজয় দিবস, বড়দিন, ইংরেজি নববর্ষের ছুটির আনন্দ উপভোগ করতে দেশি-বিদেশি প্রকৃতি আর সমুদ্রপ্রেমী মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে সাগরকন্যার দীর্ঘ বেলাভূমি। পুরনো বছরকে বিদায় আর ইংরেজি নতুন বছরকে বরণে বড়দিনের ছুটি থেকে লক্ষাধিক পর্যটকের পদচারণায় এখন মুখরিত কুয়কাটা সমুদ্র সৈকত।

সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে ভোরের সূর্যোদয় আর গোধূলি বেলার সূর্যাস্ত দেখে বিমোহিত পর্যটকরা। দর্শনীয় স্থানসহ পর্যটনমুখী ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেগুলোতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। তবে হোটেল-মেটেল-কটেজের কক্ষ খালি না পেয়ে অনেককেই আশ্রয় নিতে হয়েছে সাত-আট কিলোমিটার দূরের আবাসিক হোটেলে এবং বাসা-বাড়িতে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পর্যটকদের কাছ থেকে অনেকেই হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অঙ্কের ভাড়া। অনেকেই তাও না পেয়ে রাত কাটিছেন বিচের ছাতার নিচে। তবে আবাসিক সংকট, অতিরিক্তি ভাড়া আর মূল্য রাখা নিয়ে অনেকের অসন্তোষ থাকলেও কুয়াকাটার নিরাপত্তা আর আতিথেতায় মুগ্ধ পর্যটক। এবার কুয়াকাটায় অগত পর্যটকদের বাড়তি বিনোদনে যোগ হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার একর আয়তন নিয়ে বঙ্গোপসাগরের অথৈ জলে জেগে ওঠা চর বিজয় এবং সুন্দরবনে নৌ-ভ্রমণ।

Advertisement

গ্রীল লাইন ওয়াটার ওয়েজের ব্যবস্থাপান পরিচালক আলাউদ্দিন বলেন, প্রতিদিন সকাল সাতটায় কুয়কাটা থেকে সুন্দরবনের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে আমাদের ভ্যাসেল। ভ্রমণে জনপ্রতি সাধারণ ১৫ শত টাকা, ইকোনমি ২৫ শত টাকা এবং ভিআইপি ৩৫ শত টাকা নেয়া হচ্ছে। সকালের নাস্তা, দুপুরের লাঞ্চ এবং বিকেলে ব্রেকফাস্ট দেয়া হবে। সুন্দরবনের চারটি পয়েন্টে ছোট নৌযানে ভ্রমণ শেষে বিকেলেই কুয়কাটা ফিরে আসবে।

সুরভী পরিবহনের কর্নধার মাসুম খান বলেন, কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের বাড়তি বিনোদন এবং বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য সুরভী পরিবহন এবং গ্রীণ লাইন ওয়াটার ওয়েজের একটি ভ্যাসেল সার্ভিস চালু করা হয়েছে। কুয়াকাটার সব আবাসিক হোটেল থেকে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। এছাড়া যে কোনো সুরভী পরিবহনের কাউন্টার থেকে গ্রীণ লাইন-৭ এর টিকিট ক্রয় করা যাবে।

কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উলপক্ষে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। আবাসিক হোটেলগুলোতে কোনো কক্ষ খালি নেই।

টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম বলেন, দর্শনীয় স্থানসহ পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণে টুরিস্ট পুলিশ ও নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

Advertisement

এমএএস/জেআইএম