গাইবান্ধা পৌরসভা এলাকার সুন্দরজাহান মোড়-বনবিভাগ সড়কের দক্ষিণ ধানঘড়া ও প্রফেসর কলোনি এলাকায় ছয়টি বিদ্যুতের খুঁটি হেলে পরেছে। যে কোনো সময় তার ছিঁড়ে খুঁটিগুলো ভেঙে পরতে পারে। আর সেটি হলে একদিকে যেমন সরকারের টাকা অপচয় হবে অন্যদিকে প্রাণহানির আশঙ্কাও রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে এ অবস্থা চললেও বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই।
Advertisement
স্থানীয়রা জানায়, দুই বছর আগে পাকা সড়কের পাশে স্থাপন করার অল্প দিনের মধ্যেই খুঁটিগুলো হেলে যায়। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরে আর বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হয়নি। এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, ব্যাটারিচালিত অটোরিকসা, রিকশা-ভ্যান, সাইকেল-মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, ট্রলি ও ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন ধরনের কয়েক শতাধিক যানবাহন এবং তিন হাজারেরও বেশি মানুষ চলাচল করে।
কৃষি জমির তিনটি খুঁটির মধ্যে একটি বিদ্যুতের খুঁটির গোড়ার মাটি কমে গিয়ে হেলে পরেছে। ফলে কৃষি মৌসুমে জমিতে কাজ করতে সাহস পায় না কৃষকরা। কেননা ওই সময় জমিতে পানি থাকে। তখন বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পরার আশঙ্কায় কৃষকরা ভয়ে ভয়ে জমিতে কাজ করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গাইবান্ধা-নাকাইহাট সড়কের পাশ দিয়ে সুন্দরজাহান মোড় থেকে পশ্চিমে বনবিভাগ সড়কের দক্ষিণ ধানঘড়া ও প্রফেসর কলোনি এলাকায় পাকা সড়কের পাশে তিনটি ও কৃষি জমিতে তিনটি বিদ্যুতের খুঁটি মারাত্মকভাবে হেলে তার টান হয়ে রয়েছে। পাকা সড়কের পাশে তিনটির মধ্যে একটি খুঁটি বাঁশ দিয়ে ঠেকানো হয়েছে। এ সড়কেরই উত্তর পাশে কৃষি জমির ভেতরে আরও তিনটি বিদ্যুতের খুঁটি হেলে পরেছে। এরমধ্যে একটি খুঁটি হেলে পরে তার টান হয়ে রয়েছে। যে কোনো সময় তার ছিঁড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে মানুষ ও গবাদিপশু।
Advertisement
সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৪০) বলেন, বাইসাইকেল চালিয়ে আগে প্রতিদিন এ সড়কটি দিয়ে আমি চলাচল করতাম। কিন্তু এখন ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটির কারণে অন্য রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। কেন না কখন যে খুঁটিগুলো শরীরের ওপর ভেঙে পরে যায়। এ ভয়ে থাকি। ঝুঁকিপুর্ণ এ খুঁটিগুলোর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ওপরের দিকে তাকিয়ে থেকে রাস্তাটি পার হয়ে যেতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক চাকরিজীবী বলেন, বিদ্যুতের খুঁটিগুলো যখন স্থাপন করা হয় তখন সঠিকভাবে গর্ত করা হয়নি। গোড়ায় ঠিকমতো মাটি ও ইট দিয়ে চাপা দেয়া হয়নি। ফলে অলল্পদিনেই সেগুলো হেলে পরেছে। আবার সেগুলো ঠিক করতে হবে।
গাইবান্ধা পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. কামাল হোসেন মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, ঝুঁকিপূর্ণভাবে বিদ্যুতের খুঁটিগুলো হেলে রয়েছে। যে কোনো সময় ভেঙে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কয়েকবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকতা-কর্মচারিদের বিষয়টি জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিতরণ বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী (ডিভিশন-২) মো. আনোয়ারুল ইসলাম মুঠোফোনে জাগো নিউজকে বলেন, আমি ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি। পাকা সড়কের পাশের খুঁটিগুলো হেলে যাওয়ার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি। ওখানকার হেলে যাওয়া সবগুলো খুঁটি উত্তোলন করে পুনরায় সোজা করে স্থাপন করার জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। আগামী মাসেই এ কাজ শুরু হবে।
Advertisement
রওশন আলম পাপুল/এমএএস/আরআইপি