রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অভ্যন্তরে একটি দোকানের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে প্রক্টরকে ‘লাঞ্ছিত’ করার ঘটনায় এক দোকানি ও তার ছোট ভাইকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুর ১২ টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান ক্যাম্পাসের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে নামলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। প্রক্টরের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওই দোকানি ও তার ছোট ভাইকে মারধর করে।
Advertisement
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন সহকারী প্রক্টর ও এস্টেট দফতরের পরিচালক মো. জাহিদ আলী ক্যাম্পাসে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন। তারা পরিবহন মার্কেটে ‘ক্যাম্পাস ফুড কর্ণার’ নামের একটি দোকানের মালিক নিজাম উদ্দীন আলমকে দোকানের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেলতে বলেন। অবৈধ স্থাপনা না সরিয়ে উল্টো চটে গিয়ে দোকানি আলম ও তার ভাই মোহন উদ্দীন মুন্না প্রক্টরদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
আলম প্রক্টরকে অশ্লীল ও অশ্রাব্য (প্রকাশযোগ্য নয়) ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে সহকারী প্রক্টররা এগিয়ে গেলে আলম সহকারী প্রক্টর মো. হাবিবুর রহমানকে ধাক্কা দেন। প্রক্টর আলমকে দোকান বন্ধ করতে বললে তিনি উত্তেজিত হয়ে তাকে বলতে থাকে ‘আমার দোকান বন্ধ করতে হলে ক্যাম্পাসের অন্যসব দোকান বন্ধ করতে হবে।’ প্রক্টর তাকে পুলিশে দেয়ার কথা বললে আলম উচ্চস্বরে বলে, ‘দেখি কে আমাকে পুলিশে দেয়। পুলিশ আমার কি করবে!’
প্রক্টরদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও ধাক্কা দেয়ায় শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে আলম ও মুন্নাকে মারধর শুরু করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা দোকানের চেয়ার-টেবিল ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। পরে মতিহার থানা পুলিশ আলম ও মুন্নাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
Advertisement
এর আগে বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে অপকর্মের অভিযোগে আলমের দোকানে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের তদবীরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুনরায় তার দোকান খুলে দেয়। আলম তার দোকানের সামনের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে দোকান বর্ধিত করেছে। এতে শিক্ষার্থীদের ওই স্থান দিয়ে চলাচলে অসুবিধা হচ্ছিল।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. লুৎফর রহমান বলেন, দোকানি আলমের অপরাধ জগতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। সে দোকানে মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বিক্রি করে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ রয়েছে। আমাকে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে আলম প্রায়ই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। সে দোকানের সামনে একটি বড় অংশ অবৈধভাবে দখল করেছিল। এতে শিক্ষার্থীদের চলাফেরায় সমস্যা হচ্ছিল। দোকানের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেলতে বললে সে দুর্ব্যবহার ও গালিগালাজ শুরু করে। তাকে পুলিশে দেয়া হয়েছে।
নগরীর মতিহার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এক দোকানি ও তার ভাইকে পুলিশে দিয়েছেন। তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাশেদ রিন্টু/এমএএস/এমএস
Advertisement