ধর্ম

আল্লাহকে অধিক সেজদা করার ফজিলত

আল্লাহ তাআলার আনুগত্যে লুটিয়ে পড়ার সর্বোত্তম মাধ্যম হলো ‘সেজদা’। আর এ সেজদা আদায়ের মাধ্যমেই মানুষ দ্রুত আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের সৌভাগ্য অর্জন করে। বান্দা যখন আল্লাহ তাআলার জন্য সেজদা আদায় করে তখন তার মাঝে থাকে না কোনো আমিত্ব ও আহংকার।

Advertisement

হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেজদা আদায়ের ফজিলত বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলার অধিক সেজদা আদায়ের মাধ্যমেই মানুষ চিরস্থায়ী জান্নাত লাভ করবে।

হজরত মা’দান বিন আবি তালহা থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘(আমি) আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আজাদকৃত দাস সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললাম, ‘আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলে দিন যা করলে আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। (অথবা বললাম, ‘আল্লাহর কাছে সর্বাপেক্ষা প্রিয় আমলের কথা বলে দিন)কিন্তু তিনি উত্তর না দিয়ে চুপ করে রইলেন। পুনরায় আমি একই আবেদন করলাম। তবুও তিনি নিরব রইলেন। আমি তৃতীয়বার আমার আবেদনের পুনরাবৃত্তি করলাম। উত্তরে তিনি (হজরত সাওবান) বললেন-এ ব্যাপারে আমি আল্লাহর রাসুলকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন, ‘তুমি আল্লাহর জন্য অধিক সেজদা করাকে অভ্যাসে পরিণত করে নাও। কারণ যখনই তুমি আল্লাহর জন্য একটি সেজদা করবে; তখনই আল্লাহ তার (ওই সিজদার) বিনিময় তোমাকে একটি মর্যাদায় উন্নীত করবেন এবং একটি গোনাহ মোচন করবেন।’ (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)

অন্য হাদিসে এসেছে-হজরত উবাদা বিন সামেত রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, তিনি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে শুনেছেন, প্রিয়নবি বলেছেন, ‘প্রত্যেক বান্দাই; যখন সে আল্লাহ জন্য একটি সেজদা করে তখনই তার বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য একটি সাওয়াব লেখেন; তার একটি গোনাহ ক্ষমা করে দেন এবং তাকে একটি মর্যাদা উন্নীত করে দেন। অতএব তোমরা বেশি বেশি করে (আল্লাহর জন্য) সেজদা কর।’ (ইবনে মাজাহ, সহিহ তারগিব)

Advertisement

পরিশেষে...আল্লাহ তাআলার সেজদা আদায়ের মাধ্যমেই মানুষ জান্নাতের নেয়ামত লাভ করবে। যা হজরত রাবিয়াহ বিন কাব বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসুলেরে (খেদমতে তার) সঙ্গে রাত যাপন করতাম; তার অজুর পানি এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস হাজির করে দিতাম।

একদিন তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি আমার কাছে কিছু চাও।’ আমি বললাম, ‘আমি জান্নাতে আপনার সংস্পর্শে থাকতে চাই।’ তিনি বললেন, ‘এ ছাড়া আর কিছু?’ আমি বললাম- ‘ওটাই (আমার বাসনা)।’

প্রিয়নবি বললেন, ‘তাহলে অধিক অধিক (আল্লাহর) সেজদা করে (নফল নামাজ আদায়ে) এ ব্যাপারে আমার সহায়তা করা।’ (মুসলিম, আবু দাউদ)

মুসলিম উম্মাহর উচিত বান্দার প্রতি বিধানকৃত ফরজ নামাজ যথাযথ আদায়ের পাশাপাশি অধিক হারে সুন্নাত ও নফল নামাজ আদায় এবং অধিকহারে আল্লাহ তাআলাকে সেজদা করা।

Advertisement

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বেশি বেশি সেজদা আদায় করার তাওফিক দান করুন। সেজদা আদায়ের মাধ্যমে দুনিয়া ও পরকালের মর্যাদা লাভ করার তাওফিক দান করুন এবং চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সংস্পর্শ লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/আরআইপি