রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় স্ত্রী জান্নাতুল বুশরা সুমনাকে (২৫) শ্বাসরোধ করে হত্যাকারী স্বামী মোহাম্মদ রাসেলের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে তার সহপাঠী বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যরা। শনিবার ‘জাস্টিস ফর বুশরা কমিউনিটি’র ব্যানারে একটি মানববন্ধন করে এ দাবি জানানো হয়।
Advertisement
মানববন্ধনে উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। নিহত বুশরা এই বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তার সহপাঠীরা স্বামী রাসেলের সুষ্ঠু বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।একই সঙ্গে রাসেলকে জামিন না দেয়ার আহ্বান জানান।
নিহত বুশরার বড় বোন রুমানা জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনার দিন দুপুরে আমার সঙ্গে বুশরার কথা হয়। তার শরীর খারাপ ছিল বলে আমাকে জানায়। রাত সাড়ে ৯টায় হঠাৎ করে রাসেল ফোন করে আমাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যেতে বলে। আমরা যাওয়ার পর দেখি বুশরা একটি স্ট্রেচারে শোয়া। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে তাকে মৃত ঘোষণা করে।
তিনি আরও বলেন, স্বামীর সঙ্গে বুশরার সাংসারিক জীবন সুখের ছিল না। প্রায়ই নানা বিষয়ে তাদের ঝগড়া হত, অনেক সময়ে তা হাতাহাতি পর্যায়ে যেত বলে তাদের দারোয়ান আমাকে বলেছে। সে দিনই আমরা সন্দেহ করেছিলাম রাসেলই আমার বোনকে হত্যা করেছে। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে বুশরার হত্যাকারী স্বামী রাসেলের সুষ্ঠু, সর্বোচ্চ ও কঠিনতম শাস্তি দাবি করছি।
Advertisement
রামপুরার বনশ্রী সি ব্লকের ৪ নম্বর সড়কের ৩৪ নম্বর বাড়ির সপ্তম তলায় নিজ বাড়িতে বসবাস করত বুশরা ও তার স্বামী রাসেল। গত রোববার (৮ অক্টোবর) রাতে বুশরা মারা যান। ওই ঘটনায় বুশরার বাবা রফিকুল ইসলাম রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় রাসেলকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
তবে গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ড নিয়ে নতুন ঘটনা সাজায় রাসেল। পুলিশকে সে জানান, সেদিন রাত ৯টার দিকে অফিস থেকে বাসায় গিয়ে দরজা নক করলে ভেতর থেকে তার স্ত্রীর সাড়াশব্দ পায়নি। দরজা ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে ভেতর থেকে এক যুবক বের হয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তার পেছন পেছন দৌড়ে দারোয়ানকে বলেও ওই অজ্ঞাত পরিচয় যুবককে ধরতে পারেননি তিনি।
রাসেলকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দফা রিমান্ডে নেয় রামপুরা থানা পুলিশ। অবশেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীকে স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন রাসেল।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রলয় কুমার সাহা জাগো নিউজকে বলেন, স্বামী রাসেল নিজেই বালিশ চাপা দিয়ে সুমনাকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে। তাকে আদালতে প্রেরণ করে কারাগারে পাঠানোর জন্য আবেদন করা হবে।
Advertisement
এদিকে বুশরার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলেও এখনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদন ও চার্জশীট দাখিলের পর বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানা গেছে।
এআর/আরএস