জাতীয়

বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসনে সব করবে সরকার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসনে যা যা করা দরকার সে বিষয়ে সব রকমের পদক্ষেপ নিচ্ছে। পাশাপাশি বন্যার্তদের দুর্ভোগ লাঘবে সহায়তা করতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি চাই, আমাদের বিত্তশালীরা এই বন্যাদুর্গত মানুষের সেবায় পাশে দাঁড়াবে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে তার কার্যালয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের জন্য আর্থিক অনুদানের চেক গ্রহণকালে এ কথা বলেন তিনি। বিদ্যুৎ বিভাগ ও এর অধীনস্থ সংস্থাসমূহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, শিপার্স কাউন্সিল, ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড এবং ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি) প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আর্থিক অনুদান দেয়। এ সময় সিলেটের আতিয়া ভিলায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানকালে নিহতদের স্বজনদের অনুকূলে আর্থিক অনুদানের চেক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।

চলমান বন্যার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফসলের বেশ ক্ষতি হচ্ছে। রাস্তাঘাট ভেঙে যাচ্ছে। নদীভাঙনে অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। দুর্গত মানুষকে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের জমিজমা চলে যাচ্ছে, ঘরবাড়ি চলে যাচ্ছে, তাদের ঘরবাড়ি তৈরি করে দেয়া হবে। তাদের আবার পুনর্বাসন এবং পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে তারা যেন চাষাবাদ করতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, সব ধরনের উদ্যোগ আমরা নিয়েছি, সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।

দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলা করেই আমাদের বাঁচতে হবে। বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস- এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করা, জানমালের ক্ষতি যাতে কম হয় সে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের সরকার এ ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ, সকল প্রস্তুতি আমাদের নেয়া আছে।

Advertisement

সিলেটের আতিয়া ভবনে জঙ্গি হামলায় নিহত লে. কর্নেল মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী মোসাম্মৎ সুরাইয়া সুলতানা ও মা সাঈদা করিম, পুলিশ ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের স্ত্রী বেগম পারভীন আক্তার ও মা বেগম ফিরোজা খাতুন, পুলিশ ইন্সপেক্টর চৌধুরী মোহাম্মদ আবু কয়ছরের স্ত্রী ছায়রা ফারহানা চৌধুরী এবং ছাত্রলীগ কর্মী ওয়াহিদুলের মা বেগম সুলতানা আক্তার এবং জান্নাতুল ফাহিমের বাবা কামাল আহমদ কাবুল প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চেক গ্রহণ করেন।

ত্রাণ তহবিলে অনুদান দেয়ায় ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অনুদান দুর্গত মানুষের সহযোগিতায় কাজে লাগবে। প্রধানমন্ত্রী অনুদানের চেক প্রদানকালে আতিয়া মহলে নিহতদের স্বজনদের বেদনার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং দেন। নিহতদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর কাছে সান্ত্বনা দেবার ভাষা নাই, যা হারিয়েছে, সেটাও ফিরিয়ে দিতে পারবেন না। তিনি বলেন, তাদের ছোট ছোট বাচ্চা আছে, তারা যেন ভবিষ্যতে মানুষ হতে পারে, পরিবারগুলো যেন চলতে পারে, যতটুকু পারি, সাহায্য করে থাকি, চেষ্টা করি। স্বজনহারাদের পাশে থাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবসময় চেষ্টা করি, যারা স্বজন হারায়, আপনজন হারায়-তাদের পাশে দাঁড়াতে। আমি এটুকু বলব যে, আমি আছি, আমি দেখব। কারো কোনো অসুবিধা যেন না হয়, সেটা আমরা চেষ্টা করব।

১৯৭৫ -এর ১৫ আগস্ট ‘বাবা-মা’সহ পরিবারের ১৮ সদস্যকে হারানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বজন হারানোর বেদনা যে কত কঠিন, কত নির্মম, সেটা আমার থেকে ভালো কেউ বোঝে না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ও ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ একেএম শহিদুল হক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নাজিবুর রহমান, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

এফএইচএস/ওআর/জেআইএম