আইন-আদালত

‘পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শহর ঢাকা’

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রণয়ন গত আড়াই বছরেও প্রকাশ না করায় অবাক হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

Advertisement

গেজেট প্রণয়নে সোমবার রাষ্ট্রপক্ষ আবারও সময় আবেদন করলে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চ ‘বিস্ময়’ প্রকাশ করেন।

আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ সংক্রান্ত একটি ফাইল জমা দিলে আপিল বিভাগ বলেন, ‘আপনি আমাদের কাছে কিসের ফাইল জমা দিতে চাচ্ছেন?’

এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মুচকি হেসে ফের সময় আবেদনের কথা জানালে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, ‘আমরা তো মনে করেছি এটা গেজেটের ফাইল!’

Advertisement

তখন অ্যাটর্নি জেনারেল দুই সপ্তাহের সময় প্রয়োজন বললে আপিল বিভাগ বলেন, ‘দুই সপ্তাহ, দুই মাস ও দুই বছর সময় আবেদন আপনার কাছে একই। সময় আবেদনে শব্দ চয়নও একই। আসলে কি চান আপনারা?’

আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে প্রশ্ন করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শহর কোথায়? জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল জাপানের টোকিও শহরের কথা বললে প্রধান বিচারপতি বলেন, সবাই মনে করে টোকিও বা নিউইয়র্ক সবচেয়ে বড় শহর। আচ্ছা বলেন তো-নিউইয়র্ক বা টোকিও এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত যেতে কত সময় লাগতে পারে? বড় জোর ৫/৬ ঘণ্টা।’

‘কিন্তু আমার ধারণা ঢাকা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শহর! মনে হয়, সুপ্রিম কোর্ট থেকে গণভবন বা বঙ্গভবনের দূরত্ব কয়েক লাখ কিলোমিটার’- বলেন আদালত।

গেজেট এখনও প্রকাশ না হওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত করে প্রধান বিচারপতি বলেন, আড়াই বছরে যেহেতু এ দূরত্ব পাড়ি দেয়া সম্ভব হয়নি, আড়াই হাজার বছরেও তা পাড়ি দেয়া সম্ভব হবে না। যেখানে ফাইল চলাচল করতে আড়াই বছর সময় লাগে!

Advertisement

পরে আদালত বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি গেজেট আকারে প্রকাশ করতে সরকারকে এক সপ্তাহের সময় দেন।

গত বছরের ৭ নভেম্বর বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা ২৪ নভেম্বরের মধ্যে গেজেট আকারে প্রণয়ন করতে সরকারকে নির্দেশ দেয় আপিল বিভাগ।

১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে এ রায় দেয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল।

এফএইচ/এমএমএ/এমএআর/পিআর