বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন সে দেশের ফেডারেল কোর্ট। গত সোমবার তার রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাতিল করে আদালত বলেছেন, বর্তমানে কানাডায় অবৈধভাবে বসবাস করছেন নূর চৌধুরী। সরকার ইচ্ছা করলে যে কোনো মুহূর্তে তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করতে পারে। দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, কানাডা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই নূর চৌধুরীকে দেশে আনার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ। কানাডায় আইনি লড়াইয়ে নূর চৌধুরী হেরে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর ফলপ্রসূ আলোচনার পর বাংলাদেশের অনুরোধ রেখেছে বন্ধুপ্রতীম দেশটি। এ বার তাকে দেশে ফেরত আনার পালা।১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট বাঙালি জাতির ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের রাতে এই নূর চৌধুরীই গুলি করেছিলেন জাতির পিতাকে। বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে কামালের বন্ধু ছিলেন মেজর নূর। ১৯৯৬ সালের জুনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার মুহূর্তেই খুনি নূর চৌধুরী সপরিবারে কানাডায় পালিয়ে যান। সেখানে গিয়ে ফেডারেল কোর্টে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে একটি আবেদন করেন। তাতে তিনি নিজেকে চাকরিচ্যুত সেনা কর্মকর্তা ও অরাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে উলেল্গখ করেন। কানাডা সরকার তখন তাকে শর্তসাপেক্ষে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়।পরে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আরও ১১ খুনির সঙ্গে নূর চৌধুরীকেও মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এর পর থেকে তাকে ফিরিয়ে এনে দণ্ড কার্যকরের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে মৃত্যুদণ্ড বিরোধী কানাডা নূর চৌধুরীকে ফেরত দিতে বরাবরই আপত্তি জানায়। তা সত্ত্বেও কানাডাকে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের রায় কার্যকরের গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখে ঢাকা। সর্বশেষ গত ১৬ সেপ্টেম্বর মন্ট্রিলে কানাডা সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দু`দেশ নূর চৌধুরীকে ফেরানোর উপায় খোঁজার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়।এআরএস/এবিএস
Advertisement