দেশজুড়ে

ছাগল পালন করে সবিতা রানীর দিন বদল

ঝিনাইদহে চলছে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ছাগল পালন। উন্নত জাতের ব্লাক বেঙ্গল ছাগল লালন-পালন করে সবিতা রানী অধিকারী ও রাধা পদ অধিকারী ঝিনাইদহে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ স্থাপন করেছেন। কোরবানী ঈদকে সামনে রেখে প্রচণ্ড ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এই দম্পতি। তাদের দেখাদেখি ও উৎসাহে ওই গ্রামের অন্যান্য পরিবারগুলোও আস্তে আস্তে ঝুঁকে পড়ছে ছাগলের খামার করতে।ঝিনাইদহ সদর উপজেলার শৈলমারী গ্রামের ছবিতা রানী জানান, প্রায় ২৫ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। গরীব হওয়ায় অত্যন্ত কষ্টের সঙ্গে চলছিল সংসার। তাই তখন থেকেই দু-জনে শুরু করেন ছাগল পালন।প্রথমে একটি দেশীয় প্রজাতির ব্লাক বেঙ্গল জাতের কালো ছাগল দিয়ে শুরু হয় ছাগল পালন। এরপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের। এখন তাদের ছাগলের সংখ্যা ৮০টি। আর সঙ্গে রয়েছে বাচ্চা ছাগল। প্রতি বছর ২০ থেকে ৩০টি ছাগল বিক্রি করছেন তারা। ছাগল পালন করে প্রতি বছর তাদের সংসারে আয় দেড় থেকে ২ লাখ টাকা। ছাগল পালনের লাভের টাকা দিয়ে লেখাপড়া শেখাচ্ছেন ২ মেয়েকে, বাড়িতে দিয়েছেন পাকা ঘর। সকাল ৯টা বাজলেই বাড়ির কর্তা ছাড়লগুলো নিয়ে বেরিয়ে পড়েন মাঠে খাওয়াতে। ফেরেন সন্ধ্যার আগ দিয়ে। ছবিতা রানীর স্বামী রাধা পদ অধিকারী জানান, তাদের মতো শৈলমারী গ্রাম, বেতাই, চন্ডিপুরসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার এখন জড়িত ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল পালনের সঙ্গে। এই ছাগলের রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে। আর পালনে খরচও খুব কম। ছাগী থেকে বাচ্চা জন্মের পর ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগে একটি ছাগল বিক্রির উপযোগী হতে। এ সময়ের মধ্যে খরচ হয় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। আর বিক্রি করা হয় ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা প্রতিটি ছাগল। খরচের তুলনায় লাভ দ্বিগুণ। আর তাই ঝিনাইদহে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ব্লাক বেঙ্গল জাতের ছাগল পালন। ছাগল খামার ও ছাগল পালনকারী পরিবারগুলোতে পুরুষদের পাশাপাশি বড় ভূমিকা রাখছে বাড়ির গৃহিণীরা। সংসার সামলানোর পাশাপাশি ছাগল পালনের সব ধরনের কাজ করছেন তারা। এতে স্বচ্ছলতা ফিরেছে এর সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলোতে।   তবে সবিতা রানীর মেয়ে জানান, তাদের সবচেয়ে বড় খামার হওয়া সত্ত্বেও জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদফতর থেকে কোনো ধরনের সাহায্য সহযোগিতা পান না।ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনিসুর রহমান জানান, সমস্যা একটু থাকতে পারে। তবে এগুলো সমাধানে দায়িত্বরত কর্মকর্তাই পদক্ষেপ নেবেন। আমরা তাকে সার্বিক সহযোগিতা দেব। আহমেদ নাসিম আনসারী/এসএস/আরআইপি

Advertisement