দেশজুড়ে

চুয়াডাঙ্গায় গরুর দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে বিক্রেতারা

চুয়াডাঙ্গার পশুর হাটগুলোতে ইতোমধ্যে কুরবানির পশু নিয়ে ভিড় করতে শুরু করেছেন খামারিরা। ক্রেতারাও ছুটছেন পশুর হাটে। অনেকে গরু-ছাগল কিনে কুরবানির জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। কিন্তু পশুর ব্যাপক আমদানির ফলে দর পড়ে যাওয়ায় হতাশ বিক্রেতারা।চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ঘোড়ামারা ব্রিজের নিকট পৌর পশুর হাট প্রতি রোববার, বদরগঞ্জ পশুর হাট শনিবার, সরোজগঞ্জ গরুর হাট শুক্রবার এবং ছাগলের হাট সোমবার বসে। এছাড়া আলমডাঙ্গা পৌর পশুর হাট প্রতি বুধবার, জামজামি ও ঘোষবিলা পশুর হাট সোমবার, পারলক্ষ্মীপুর পশুর হাট রোববার, গোখুলখালী পশুহাট শুক্রবার, হাটবোয়ালিয়া পশুহাট শনিবার, ডুগডুগি পশুহাট সোমবার এবং শিয়ালমারী পশুর হাট প্রতি বৃহস্পতিবার বসে। সরেজমিনে ডুগডুগি পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, কুরবানি সামনে রেখে দূর-দূরান্ত থেকে খামারি ও ব্যবসায়ীরা ট্রাক, নসিমন, করিমন, পাওয়ারট্রিলারে রু ও ছাগল নিয়ে আসছেন। জেলার বিভিন্ন হাটে গত সপ্তাহে বেচাকেনা জমে উঠলেও এবার দরপতনে বিক্রেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। জেলার সবচেয়ে বড় এই পশুর হাটে ব্যাপক আমদানি হওয়ায় প্রতিটি গরুর দাম ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কমে গেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।  মৌসুমের সর্বোচ্চ পশু আমদানি হয় এ ডুগডুগি হাটে। বাজারের নির্দিষ্ট স্থানে পশু রাখার জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ায় হাট ছড়িয়ে পড়েছে আশেপাশের সড়ক ও খোলা স্থানে। তবে আমদানির তুলনায় বিক্রি হয়নি। আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ গ্রামের গরু ব্যাপারী আবুল হাসেম ডুগডুগি হাটে ৫টি গরু এনেছেন। হাটের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নানা উপায়ে চেষ্টা করেও আশানুরূপ দর না মেলায় গরুগুলো বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন। আবুল হাসেম জানান, গত হাটে ৬০ হাজার টাকার গরু ৫০ হাজার টাকা, ৫৫ হাজার টাকার গরু ৪০ হাজার টাকা ও ৯০ হাজার টাকা দরের গরুর ৮৫ হাজার টাকা দর উঠেছে। এত কমে বিক্রি করতে হলে ব্যবসার পুঁজি হারিয়ে যাবে। শেষ মুহূর্তে বেশি দরের আশায় তারা চড়া দরে গরু কিনে এখন চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।এদিকে হাটে চোখে পড়ার মতো ৯টি গরু তুলেছিলেন জীবননগর উপজেলার গরু ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী। তিনি প্রতিটি গরুর দাম হাঁকিয়েছেন দেড় লাখ টাকা করে। কিন্তু ১ লাখ টাকার ওপরে দর ওঠেনি। তাই নিরাস মনেই ফিরে যান তিনি।একই সঙ্গে ঢাকার হাটে গরুগুলো বিক্রির চেষ্টা করবেন বলে জানালেন লিয়াকত আলী। তবে এখনো চুয়াডাঙ্গা জেলার আশেপাশের জেলাগুলোতে প্রচুর পরিমাণে গরু-ছাগল রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে যদি ভারতীয় গরু আমদানি হয়, তাহলে পশু পালনকারী ও ব্যবসায়ীদের দুর্দশার শেষ থাকবে না বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন কয়েকজন ব্যাপারী। গরু-ছাগলের ব্যাপক আমদানিতে শুধু ব্যাপারীরা নয় পালনকারীরাও বিক্রি নিয়ে শঙ্কিত। পশু পালনের খরচ বৃদ্ধি অব্যহত থাকায় এ খাত আস্তে আস্তে লোকসানের দিকে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন অনেক খামারী। এদিকে ছাগলের বাজারেরও একই অবস্থা। ২০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ছাগলের দাম এখন ১৫ হাজার টাকা। দর নিয়ে ছাগল পালনকারী ও ব্যাপারীরা হতাশায় পড়লেও স্বল্প মূল্যে ছাগল কিনে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন ক্রেতা।চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ আমির মজিদ গত শনিবার জীবননগরে এক মতবিনিময় সভায় জানান, এবছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৫২ হাজার গরু বিক্রির জন্য খামারে মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশের মাধ্যমে গরু আনা থেকে বিরত রাখতে সতর্ক পাহারায় রয়েছে বিজিবি সদস্যরা।এফএ/পিআর

Advertisement