বিশেষ প্রতিবেদন

ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে বন্দিদের স্বজনরা

গত শুক্রবার ঢাকা থেকে বন্দিদের কেরানীগঞ্জের নবনির্মিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। সোমবার থেকে তাদের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। একসঙ্গে অনেক স্বজন আসায় সাক্ষাৎ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সময় ব্যয় হচ্ছে। আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে স্বজনদের। সোমবার সরেজমিন কেরানীগঞ্জে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়।  নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারের মূল ভবনের বাইরে স্বজনদের অপেক্ষা করার জন্য একটি আলাদা ঘর যাতে লাইট, ফ্যান, টেলিভিশন এবং অ্যাটাচ টয়লেট ছিল। তবে এর কোনোটিই নেই দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সর্ববৃহৎ কেরানীগঞ্জের এই কারাগারে! সোমবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, তীব্র রোদের মধ্যে কারাগারের আশপাশে বিচ্ছিন্নভাবে বসে এবং দাঁড়িয়ে আছেন বন্দিদের স্বজনরা। কেউ একটু ছায়ার জন্য ক্যান্টিনের ছাউনির নিচে ঠাঁই নিয়েছেন। বাকিরা প্রখর রোদে বসে আছেন। এদিকে বন্দিদের স্বজনদের জন্য বৃষ্টিতেও কোনো ব্যবস্থা রাখেনি কারা কর্তৃপক্ষ। কারাগারের আশপাশে কোনো হোটেল, বাড়ি কিংবা ছাউনি নেই। বর্তমানে বর্ষাকালে বৃষ্টি হলেও কারাগারের বাইরে বসেই ভিজতে হবে তাদের। কারা কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নিয়ে সালেহা বেগম নামে একজন জাগো নিউজকে বলেন, ছেলেকে দেখতে এ পর্যন্ত যতবার কারাগারে এসেছি, পদে পদে টাকা গুনতে হয়েছে। অথচ আমাদের বসার জায়গাটুকু রাখা হয়নি কারা নির্মাণের পরিকল্পনায়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি আশা করবো কারা কর্তৃপক্ষ শিগগিরই অস্থায়ীভাবে স্বজনদের অপেক্ষার জায়গা করে দেবে। কারাগারের বাইরে স্বজনদের খাবারের জন্য নেই কোনো হোটেল কিংবা ক্যান্টিন। একটি শুকনা খাবার বিক্রির দোকান রয়েছে। যেখান থেকে স্বজনরা খাবার কিনে আসামিদের জন্য ভেতরে পাঠাতে পারেন। এছাড়া স্বজনদের জন্য কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এ বিষয়ে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি-প্রিজন) বলেন, কারাগারের বাইরে বন্দিদের স্বজনদের জন্য একটি ক্যান্টিন এবং একটি রেস্টুরেন্ট তৈরির কাজ চলছে। আশা করছি, দ্রুত এটি তৈরি হয়ে যাবে। এখানকার খাবারের ন্যায্যমূল্য ঠিক করা হবে। এর আগে ২৯ জুলাই শুক্রবার একদিনে সব বন্দি পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জের নবনির্মিত এই কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এই কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪ হাজার ৫৯০ হলেও বর্তমানে মোট ৬ হাজার ৪০০ বন্দি রয়েছে।এআর/এসএইচএস/এবিএস

Advertisement