‘তারেক রহমান বিচারককে প্রভাবিত করে নিম্ন আদালতে খালাস পেয়েছিলেন’ আইনমন্ত্রীর এমন বক্তব্যই প্রমাণ করে বিচার বিভাগ সরকার কর্তৃক প্রভাবিত বলে দাবি করেছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবী ফোরামের নেতারা। রোববার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে জাতীয়তাবদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তারা। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সকল ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার দাবিতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। পরে মাহবুব উদ্দিন খোকন ছাড়াও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া। এসময় উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, ওয়ালিউর রহমান, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ।অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা সরকার কর্তৃক প্রভাবিত হয়। সরকার প্রভাবিত না করলে বিচার নিরপেক্ষ হয়।’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বিচার বিভাগ স্বাধীন হলে হস্তক্ষেপ কীভাবে হয়। সুতরাং আইনমন্ত্রীর এই বক্তব্যেই প্রমাণিত হয় বিচার বিভাগ সরকার কর্তৃক প্রভাবিত হয়। এই প্রভাব শুধু নিম্ন আদালত নয়, উচ্চ আদালতেও হয়।’তারেক রহমান আপিল করবেন কি না জানতে চাইলে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘তারেক রহমান যথাসময়ে আপিল করবেন। বাংলাদেশে ১৭ বছর পরও আপিল করার নজির আছে। সেই আপিল আদালত গ্রহণও করেছেন।’ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘এই মামলায় বর্তমান আইনমন্ত্রী দুদকের পক্ষে এই মামলা পরিচালনা করেছেন। তিনি আইনমন্ত্রী হওয়ার পর বিচারক, পিপি সব নিয়োগ করেছেন। রায় তাদের পক্ষে গেলে নিরপেক্ষ আর বিপক্ষে গেলে প্রভাবিত।’ লিখিত বক্তব্যে মাহবুব উদ্দিন খোকন আরো বলেন, ‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের অ্যাকাউন্ট থেকে একটি সাপ্লিমেন্টারি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে মোট ৫২ হাজার ইউএস ডলার (বাংলাদেশি টাকায় যা ৩৮ থেকে ৪০ লাখ টাকা) খরচ করেছিলেন। দুদকের সাক্ষী খাদিজা ইসলাম একটি পাওয়ার প্রজেক্টের মাধ্যমে কাজের জন্য মামুনকে ঘুষ দিয়েছেন। যদিও তারেক রহমান ওই খরচকৃত টাকা বাৎসরিক ট্যাক্স ফাইলে প্রদর্শন করেছিলেন।’ এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তারেক রহমান ঘুষের টাকা খরচের কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন কি না, জানতে চাইলে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘সাপ্লিমেন্টারি কার্ড হোল্ডারের মাধ্যমে এ ধরনের অর্থ উত্তোলনে বাংলাদেশ তো দূরে থাক, বিশ্বের কোথাও মামলা হয়েছে কি না আমার জানা নেই। তার ওপর ওই টাকা তারেক রহমান দেশে ফিরে ফেরত দিয়েছেন। সেই ট্যাক্স ফাইলও করা আছে।’এদিকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ২৫ থেকে ২৮ জুলাই বাংলাদেশের সকল বারে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়। ফোরামের পক্ষ থেকে সকল বার নিজেদের সুবিধামতো সময়ে এই কর্মসূচি পালন করবে। আর সুপ্রিম কোর্ট বারে চারদিন বেলা সোয়া ১টা থেকে এই কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও জানান মাহবুব উদ্দিন খোকন। এফএইচ/এসকেডি/আরআইপি
Advertisement