আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ঝালকাঠির সেমাই কারখানাগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা। কিন্তু এসব কারখানার নোংরা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের মধ্যে তৈরি সেমাই কতটা স্বাস্থ্যসম্মত সেটাই দেখার বিষয়। ঝালকাঠি থেকে উৎপাদিত এসব সেমাই প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী জেলাসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। নিম্নমানের ডালডা আর পোড়া তেল দিয়ে ভাজা এই সেমাইয়ের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইয়ের কোনো নজরদারি বা তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ঝালকাঠিতে ছোট বড় ৭টি কারখানায় ঈদ উপলক্ষে সেমাই তৈরি হচ্ছে। এসব কারখানায় হাতে গ্লোবস এবং মাস্ক ব্যবহার না করায় শ্রমিকদের হাতে থাকা বড় বড় নখ ও হাঁচি-কাঁশির ময়লা পড়ছে তৈরি সেমাইয়ে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নিম্নমানের ডালডা ও পোড়া তেল। এভাবেই প্রতিদিন তৈরি করা হচ্ছে শত শত মণ সেমাই। ময়লা, গাদ ও দুর্গন্ধযুক্ত ট্রে এবং কাদাযুক্ত মেঝে পরিষ্কার করার কোনো উদ্যোগ নেই মালিক পক্ষের। মালিক পক্ষ বলছে এর চেয়ে কারখানা পরিষ্কার রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। মালিক পক্ষের দাবি, বিএসটিআই ও স্যানিটারি পরিদর্শক এলেও তাদের পরিবেশ ভালো থাকায় কোনো জরিমানা করা হয় না। সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের কলাবাগানে `মিনার`, কাঠপট্টিতে `জেদ্দা`, `কুলসুম`, `নুরানী`, পশ্চিম চাঁকাঠিতে `মক্কা` ও `মদিনা` সেমাই কারখানায় ব্যস্ত সময় পার করছে মালিক শ্রমিকরা। তৈরি করা সেমাই ঝালকাঠিসহ পার্শ্ববর্তী জেলায় সরবরাহও শুরু করেছে ইতোমধ্যে। সেমাই তৈরির জন্য খামি (ময়দা দিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ) রাখার ট্রের উপরে হাটাহাটি করে কাজ করছে শ্রমিকরা।এ ব্যাপারে শহরের কলাবাগান এলাকার মিনার লাচ্ছা সেমাই কারখানার মালিক সেলিনা কবির ও কাঠপট্টি এলাকার মদিনা লাচ্ছা সেমাই কারখানার মালিক নান্নু মিয়া জানান, আমাদের তৈরি এ সেমাই ঝালকাঠি ছাড়াও বরগুনা, পটুয়াখালি, তালতলি, আমুয়াসহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। প্রতিবারের ন্যায় এবারো প্রস্তুতি ভালো। আমাদের কারখানার পরিবেশ পৌরসভার স্যানিটারি কর্মকর্তাসহ বিএসটিআইয়ের লোকজন এসে দেখে যায়। আর সেমাইয়ের মন্ড (খামি) তৈরি করতে একবারের বেশি ব্যবহৃত তেল কাজে লাগানো হয়। এছাড়া উপায় নেই। তারা আরো জানান, ২০ রমজান থেকেই বেচাকেনা আরো জমজমাট হবে। তবে আমরা উৎকৃষ্টমানের তেল ও ডালঢা দিয়ে সেমাই তৈরি করি বলে বিএসটিআই এলেও জরিমানা করে না। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ঝালকাঠি জেলার সহকারী পরিচালক সাফিয়া সুলতানা বলেন, সেমাই কারখানার পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তা দেখতে অভিযান পরিচালনা করা হবে। পরিদর্শনে গিয়ে এ অবস্থা দেখতে পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসএস/এবিএস
Advertisement