অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে প্রথমবারের মতো দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ডিএসইতে লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়ানোর পাশাপাশি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। তবে দাম কমার তালিকায় রয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠান।
Advertisement
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। সেইসঙ্গে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। লেনদেনের একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১০০ পয়েন্টের ওপরে বেড়ে যায়।
তবে লেনদেনের শেষদিকে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। অবশ্য বেশিরভাগ ব্যাংক দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে। ফলে দাম কমার তালিকা বড় হলেও মূল্যসূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।
Advertisement
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৫০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৭টির। আর ৭৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৮২টির দাম কমেছে এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ২১টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৪৭টির দাম কমেছে এবং ১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৮টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৬টির দাম কমেছে এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৯১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪৪৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৭০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১১৪ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৩ কোটি ৩৯ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৪৩ কোটি ১৬ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৩২০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বরের পর ডিএসইতে আবার হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো।
Advertisement
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সিটি ব্যাংক। কোম্পানিটির ৫১ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার। ৩৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, যমুনা ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক এবং পূবালী ব্যাংক।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ২৮১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৭টির এবং ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
এমএএস/এমএএইচ/জেআইএম