জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে রচিত ১১ নাটক নিয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শুরু হচ্ছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ নাট্যোৎসব ২০২৫’। আজ (৩১ জুলাই) বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে এই উৎসব চলবে ৮ আগস্ট পর্যন্ত। মোট ১১টি নাট্যদল উৎসবে অংশ নেবে।
Advertisement
প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন এবং পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে নাট্য প্রদর্শনী চলবে। প্রতিটি নাটক নির্মিত হয়েছে ২০২৪ সালের আন্দোলন ও সমকালীন সামাজিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে।
‘বর্ষা বিপ্লব’ চেতনা উপজীব্য করে এই নাট্যোৎসবের পৃষ্ঠপোষকতা করছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সবার জন্য উন্মুক্ত নাট্য প্রদর্শনীগুলো।
শিল্পকলা একাডেমির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২০২৪ সালের জুলাই- আগস্টে ছাত্র-জনতার যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন দেশজুড়ে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল তা শুধু রাজনৈতিক দাবির পরিসরেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং তা হয়ে উঠেছিল জাতির আত্মদর্শন, নৈতিক পুনর্জাগরণ এবং একটি মানবিক ভবিষ্যতের প্রত্যয়ে উচ্চারিত প্রতিরোধের ভাষা। সেই সময়ের আত্মত্যাগ, প্রতিবাদ ও প্রতিজ্ঞার ভাষ্য এবার রূপ নিচ্ছে নাটকে- যেখানে সংলাপ হবে প্রত্যয়ের ভাষা, দৃশ্য হবে ইতিহাসের অন্তর্জীবন, আর মঞ্চ হবে এক প্রতীকী রাজপথ।’
Advertisement
আরও বলা হয়, ‘এ উৎসবের উদ্দেশ্য শুধু নাট্যশিল্পের চর্চা নয়; এটি এক গভীর আত্মজিজ্ঞাসা- তরুণ প্রজন্মকে আহ্বান জানায় তাদের সাংস্কৃতিক চেতনা, গণতান্ত্রিক দায়িত্ববোধ এবং নৈতিক অবস্থান নিয়ে নতুন করে ভাবতে। এখানে থিয়েটার হয়ে উঠবে প্রতিবাদের ভাষা; প্রতিটি দৃশ্য ও সংলাপ হয়ে উঠবে ইতিহাসের পুনর্লিখন।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বিশেষ অতিথি সংস্কৃতি সচিব মো. মফিদুর রহমান। সভাপতিত্ব করবেন শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন।
উৎসবে কবে কী নাটকউদ্বোধনী সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘রি-রিভোল্ট’। পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন নায়লা আজাদ। নাটকটি মঞ্চায়ন করবে ‘টিম কালারস’।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে হবে নাটক ‘শুভঙ্কর হাত ধরতে চেয়েছিল’। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন দীপক সুমন, পরিবেশনায় থাকবে ‘তীরন্দাজ রেপার্টরী’।
Advertisement
একই সময়ে পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হবে নাটক ‘দেয়াল জানে সব’। রচনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন শাকিল আহমেদ সনেট, পরিবেশন করবে ‘স্পন্দন থিয়েটার সার্কেল’।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘দ্রোহের রক্ত কদম’। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন ইরা আহমেদ, প্রযোজনাটি মঞ্চস্থ করবে ‘এথেরা’।
রোববার সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘404: নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি’। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন মো. লাহল মিয়া এবং মঞ্চায়ন করবে ‘ফোর্থ ওয়াল থিয়েটার’।
সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘এনিমেল ফার্ম’। জর্জ অরওয়েলের ‘এনিমেল ফার্ম’ অবলম্বনে নাট্যরূপ দিয়েছেন নজরুল সৈয়দ এবং নির্দেশনায় রয়েছেন সাইদুর রহমান লিপন। এটি পরিবেশন করবে ‘রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়’।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে জহির রায়হানের উপন্যাস অবলম্বনে নাটক ‘আর কত দিন’। নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন খন্দকার রাকিবুল হক। পরিবেশন করবে ‘অন্তর্যাত্রা’।
একই সময়ে পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হবে নাটক ‘অগ্নি শ্রাবণ’। রচনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন ইলিয়াস নবী ফয়সাল। পরিবেশন করবে ‘ভৈরবী’।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘মুখোমুখি’। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন ধীমান চন্দ্র বর্মন। এটি মঞ্চায়ন করবে ‘থিয়েটার ওয়েব’।
৭ অগাস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘ব্যতিক্রম এবং নিয়ম’। বার্টোল্ট ব্রেখট এর রচনা থেকে অনুবাদ করেছেন শহীদুল মামুন, নির্দেশনা দিয়েছেন আজাদ আবুল কালাম। নাটকটি মঞ্চস্থ করবে ‘প্রাচ্যনাট’।
৮ অগাস্ট শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে সমাপনী সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘আগুনি’। নাটকটির পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন কাজী নওশাবা আহমেদ এবং পরিবেশন করবে ‘টুগেদার উই ক্যান’।
এমআই/এলআইএ/জেআইএম