আইন-আদালত

তারেক রহমান-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি ১৩ আগস্ট

তারেক রহমান-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি ১৩ আগস্ট

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ১৩ আগস্ট পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

Advertisement

এ মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অন্য আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ শুনানির নতুন দিন ঠিক করে আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ। তারেক রহমান ও বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান এবং অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

Advertisement

আদালতে বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ও অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস।

গত ১৭ জুলাই এ মামলায় আসামিদের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। ওইদিন আদালত এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানির জন্য ২৪ জুলাই দিন ঠিক করেন। কিন্তু সেদিন শুনানি হয়নি। পরে আপিল আবেদনটি শুনানির জন্য ৩১ জুলাইয়ের কার্যতালিকায় আসে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে গত বছরের ১ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পান রাষ্ট্রপক্ষ। একই সঙ্গে শুনানির জন্য দিন ধার্য করে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ দাখিল করতে বলেন আদালত।

আরও পড়ুনঅপেক্ষা করেন, কিছুদিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাগোপালগঞ্জে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার হয়নি: সেনাসদর

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে গত ১ জুন এ আদেশ দেন আদালত। লিভ টু আপিলের ওপর গত ১৫ মে শুনানি শুরু হয়। এরপর ২৮ মে শুনানি নিয়ে লিভ মঞ্জুর করে আদেশ দেওয়া হয়। গত ১৭ জুলাই আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য করে এসময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ দাখিল করতে বলা হয়।

Advertisement

দুই দশক আগে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা হয়। অল্পের জন্য ওই হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা।

তবে হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন দলটির তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়।

পরে এ গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা পৃথক মামলায় (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজার রায় বাতিল করে গত বছরের ১ ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট।

আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল, জেল আপিল ও বিবিধ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান (বর্তমানে আপিল বিভাগের বিচারপতি) ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এই রায়ের ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিরা খালাস পান।

গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে পৃথক দুই মামলার (হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা) পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল করে। গত ১৩ মার্চ আবেদন দুটি আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে ওঠে। চেম্বার জজ আদালত সেদিন আবেদন দুটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় আবেদন দুটি একসঙ্গে আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসে ও শুনানি হয়। এরপর আজ আবারও শুনানি হয়েছে।

এফএইচ/কেএসআর/জেআইএম