একটা সময় ভ্রান্ত ধারণা ছিল, বন্ধ্যাত্বের জন্য কেবল নারীই দায়ী। তবে সেই ধারণা ভেঙেছে বিজ্ঞান। বর্তমানে পুরুষের মধ্যেও ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যাত্বের সমস্যা বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে ৩০ বছর বয়সী পুরুষদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা বাড়ছে। বিগত ৪০ বছরে বিশ্বে পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে গড়ে ৫৯ শতাংশ। শরীরে ভিটামিন ও জিংকের ঘাটতিজনিত কারণে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনলে শুক্রাণুর গুণগত মান সহজেই বৃদ্ধি পেতে পারে।
Advertisement
আসুন জেনে নেওয়া যাক কোন খাবারগুলো পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব এড়াতে সাহায্য করবে-
টমেটোলাইকোপেন নামক উপকারী উপাদান রয়েছে এই সবজিতে। টমেটোতে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শুক্রাণুর গুণগত মান বাড়াতে সহায়তা করে। টমেটো রান্নার সময় অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভালো শোষণ হয়।
কলাকলা পুরুষদের ফার্টিলিটি বাড়াতে পারে। কলায় থাকা ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬,পটাশিয়াম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা হেলদি স্পার্ম তৈরির কাজে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনে খাদ্য তালিকায় কলা রাখতে পারেন।
Advertisement
সূর্যমুখী ফুল ও কুমড়োর বীজ পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকর। এছাড়া এতে থাকা টেসটোসটেরোন উপাদান হরমোনের সিরামের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। একই সঙ্গে শুক্রাণুর পরিমাণ, জীবনশক্তি বৃদ্ধিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে।
ডিমউচ্চ প্রোটিনের কারণে শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ডিম বেশ উপকারী। ডিম ক্ষতিকারক মুক্ত র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে এবং শুক্রাণুর চলাচল বৃদ্ধি করে। ডিমে পুষ্টি উপাদানগুলো শক্তিশালী এবং সুস্থ শুক্রাণু উৎপাদনে অবদান রাখে এবং প্রজনন ক্ষমতাও উন্নত করে।
পালং শাকশুক্রাণুর সুস্থ বিকাশের জন্য খাদ্যতালিকায় ফলিক অ্যাসিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পালং শাকে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিডে থাকে। যা বীর্যে অস্বাভাবিক শুক্রাণুর উপস্থিতি হ্রাস করে।
মেথিমেথি বীজ কেবল স্বাস্থ্যকর পুষ্টিগুণে ভরপুর নয়, মেথি টেস্টোস্টেরনের মাত্রা এবং শুক্রাণুর সংখ্যাও বাড়াতে পারে। সারারাত এক গ্লাস পানিতে কিছু মেথি ভিজিয়ে রেখে সকালে পান করলে বেশ উপকার পাবেন। আরও পড়ুন
Advertisement
ডার্ক চকলেটে এল-আর্জিনিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। নিয়মিত পরিমাণমতো ডার্ক চকলেট খেলে শুক্রাণুর সংখ্যা উন্নত হয়ে পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দূর করতে পারে।
আখরোট ও বাদামআখরোট ও বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড, বি৬, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা সুস্থ শুক্রাণু বিকাশে সাহায্য করে। এছাড়া এর পুষ্টি উপাদানগুলো শুক্রাণুর গতিশীলতা, আকৃতি এবং আকার বৃদ্ধি করে। সোসাইটি ফর দ্য স্টাডি অব রি-প্রোডাকশনের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ২১ থেকে ৩৫ বছরের পুরুষ প্রতিদিন ৭০ গ্রাম আখরোটখেলে তার শুক্রাণুর জীবনীশক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি সালাদের সঙ্গে কিংবা স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।
অশ্বগন্ধাঅশ্বগন্ধা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। ২০১৬ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ৪৬ জন পুরুষ যাদের শুক্রাণুর সংখ্যা কম ছিল, যারা ৯০ দিন ধরে প্রতিদিন ৬৭৫ মিলিগ্রাম অশ্বগন্ধা গ্রহণ করেছিলেন, তাদের শুক্রাণুর সংখ্যা ১৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। সাধারণত দুধ বা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে, অথবা গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল, টাইমস অব ইন্ডিয়া
এসএকেওয়াই/কেএসকে/এমএস