নাটোরের বড়াইগ্রামের আহম্মদপুর বাজারে ‘চাঁদা না পেয়ে’ ১০টি দোকানে তালা লাগানোর অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা জামায়াতে ইসলামী।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়াতের আমির মীর নূরুল ইসলাম দাবি করেছেন, ওই ঘটনার সঙ্গে চাঁদাবাজির কোনো সম্পর্ক নেই।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে চাঁদা না দেওয়ায় বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মদপুর বাজারের ১০টি দোকানে তালা লাগানো ও এ ঘটনায় জামায়াত নেতাসহ চারজন গ্রেফতারের খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরটি জামায়াতের নজরে এসেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, আহম্মদপুর বাজারের বিরোধপূর্ণ কয়েকটি দোকানঘরের মালিকানা নিয়ে কোরবান আলীদের সঙ্গে রুহুল আমীনদের মামলা চলছে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সেখানে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। বৈঠকে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোরবান আলীদের প্রতি মাসে দোকানভাড়া বাবদ পাঁচ হাজার করে টাকা নির্ধারণ করা হয়। এই ভাড়া নির্ধারণের বিষয়টিকে ‘চাঁদা দাবি করা’ উল্লেখ করা হয়েছে। এটা অন্যায়।
Advertisement
তবে সংবাদ সম্মেলনে দোকানে তালা লাগানোর বিষয়টিকে অন্যায় বলে স্বীকার করেন জেলা জামায়াতের আমির মীর নূরুল ইসলাম। তিনি বলেন, যিনি তালা লাগিয়েছেন, তিনি জামায়াতের নেতা নন। সত্যিই যদি চাঁদাবাজির ঘটনা থাকত, তাহলে অভিযুক্তদের অবশ্যই দল থেকে বহিষ্কার করা হতো। যদি কেউ বাড়াবাড়ি কিছু করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ চাঁদাবাজির মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে তাহলে কেন ঘটনাটিকে চাঁদাবাজি বলা যাবে না, এমন প্রশ্নে জামায়াতের জেলা আমির বলেন, ‘কেউ অভিযোগ করতেই পারে। পুলিশ তা তদন্ত করে দেখবে। কিন্তু আমরা মনে করি, কথিত চাঁদাবাজির অভিযোগ সঠিক না।’
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী মোতালেব হোসেন বলেন, ‘দোকানঘরের মালিক না হয়েও ভাড়া চাইলে সেটিকে চাঁদাবাজি না বলে কী বলা যাবে? অন্যায়ভাবে টাকা দাবি করা এবং তা দিতে অপারগতা জানানোর কারণে মারধর করা আইনের দৃষ্টিতে অবশ্যই চাঁদাবাজি। জামায়াত তাদের নেতাকর্মীদের রক্ষার জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছে।’
এদিকে চাঁদা না দেওয়ায় আহম্মদপুর বাজারের ১০টি দোকানঘরে তালা লাগিয়ে দখলে নেওয়ার অভিযোগে জামায়াত নেতাসহ চারজনকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পাশাপাশি বেদখল হওয়া দোকানঘরগুলোও দখলমুক্ত করে প্রকৃত মালিকদের জিম্মায় দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গ্রেফতার চারজনকে আদালতে পাঠানো হয়। বড়াইগ্রাম আমলি আদালতের বিচারক তৌহিদুর রহমান বিকেল ৪টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
Advertisement
এ নিয়ে জাগো নিউজে ‘চাঁদা না পেয়ে দোকানে তালা, জামায়াত নেতা-বিএনপি কর্মীসহ গ্রেফতার ৪’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
রেজাউল করিম রেজা/এমএন/জেআইএম