ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
Advertisement
আখতার বলেন, বিচার ব্যবস্থার পুরো কাঠামোর সঙ্গে আওয়ামী লীগ বা তাদের কিছু সহযোগীকে আমরা যুক্ত করতে পেরেছি। এতগুলো হত্যাকাণ্ডের পরও অল্পকিছু অপরাধীকে বিচার কাঠামোর আওতায় আনা গেছে। একটা বছর পেরিয়ে গেলেও বিচারিক অগ্রগতি দৃশ্যমান নয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদনে সুপারিশ বাস্তবায়নে জুলাই স্মরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার মিশন এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন।
জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে আখতার হোসেন বলেন, জুলাইয়ের ঘটনায় রাষ্ট্রীয় বাহিনীর বেআইনি কর্মকাণ্ড এবং ‘উপর মহলের নির্দেশে হত্যাকাণ্ড সংঘটনের’ তথ্য উঠে এসেছে। অথচ এসবের জন্য দায়ীদের এখনো বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।
Advertisement
এনসিপির এই নেতা বলেন, আমরা দেখেছি, এতগুলো মানুষকে হত্যা করা হলো, গ্রেফতার করা হলো, নির্যাতন চালানো হলো—এসব শেখ হাসিনার মরণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের আদেশে সংঘটিত হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সম্পৃক্ততা থাকলেও কাউকেই বিচার পর্যন্ত আনতে পারিনি।
আরও পড়ুনজনগণকে ধান দেখিয়ে তারা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খায়: নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীবিচার প্রক্রিয়ার কাঠামো আরও বিস্তৃত করার আহ্বান জানিয়ে এই এনসিপি নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের যেসব ব্যক্তি হত্যাকাণ্ডে ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত, তারা কেউ দেশে লুকিয়ে আছে, কেউবা বিদেশে। তাদের গ্রেফতার এবং দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ‘গভীর সংস্কারের’ সুপারিশের প্রসঙ্গ টেনে আখতার বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্র কাঠামো এবং সংবিধানে যে বৈষম্যের জায়গা তৈরি হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরাও সেই আহ্বানকে সমর্থন করি এবং মনে করি, নতুন বন্দোবস্তের আলোকে নতুন কাঠামোর প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছি এবং এসব প্রস্তাব যেন বাস্তবায়নযোগ্য হয়, সে বিষয়ে আমাদের বক্তব্য রেখেছি।
Advertisement
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরে আখতার বলেন, অতীতে দেখা গেছে, দলীয়ভাবে বিচারক নিয়োগ এবং সরকারপ্রধানের অনুমতি ছাড়া রায় প্রকাশের মতো ঘটনা ঘটেছে। এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
আহতদের চিকিৎসা ও নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, যেসব ভাই শহীদ হয়েছেন, তাদের পরিবার এখনো নিপীড়নের মধ্যে রয়েছেন। তাদের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প নিতে হবে। পাশাপাশি যারা আহত হয়েছেন, তাদের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
জেপিআই/ইএ/জেআইএম