ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল দুটি ছোট্ট শিশু। তারা জানে না, যে মা সকালবেলায় কাজে বেরিয়েছিলেন তিনি আর কখনো ফিরে আসবেন না।
Advertisement
গাজীপুরের একটি খোলা ড্রেনে পড়ে প্রাণ হারানো ফারিয়া তাসনিম জ্যোতির (৩২) নিথর দেহ যখন চুয়াডাঙ্গা শহরের বাগানপাড়ার নিজ বাড়িতে পৌঁছায় তখন আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। যমজ দুই সন্তান মায়ের কফিন জড়িয়ে শুধু বলছিল, ‘আম্মু ওঠো’। তবে তারা জানতো না সন্তানদের শত ডাকেও নীরব থাকা মা আর কখনোই উঠবে না।
ফারিয়া তাসনিম জ্যোতি ছিলেন ঢাকায় একটি ওষুধ কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগের ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার। চাকরির প্রয়োজনে গিয়েছিলেন টঙ্গীর ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে। রোববার (২৭ জুলাই) রাতে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে ফিরছিলেন, পথেই পা পিছলে খোলা ড্রেনে পড়ে নিখোঁজ হন। ৩৬ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে বাঁশপট্টি এলাকার বিলে তার মরদেহ পায় ফায়ার সার্ভিস।
পরে শালিকচূড়া বিল থেকে উদ্ধার করা হয় তার মরদেহ। ফারিয়া তাসনিম জ্যোতির আট বছর বয়সী যমজ দুই ছেলে আছে। তিনি চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রয়াত কাউন্সিলর ওলিউল্লাহ আহাম্মদ বাবলুর মেয়ে।
Advertisement
মঙ্গলবার রাত ৯টায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বাগানপাড়া সংলগ্ন পুরাতন জামে মসজিদে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় জ্যোতিকে। তাকে শেষবারের মতো দেখতে হাজির হন এলাকাবাসী, সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজনসহ শত শত মানুষ।
জ্যোতির বড় ভাই মো. শোভন বলেন, আমার বোন সারাজীবন সংগ্রাম করে সংসার চালিয়েছে। দুই সন্তানকে মানুষ করার স্বপ্ন ছিল তার। এখন ওরা শুধু মাকে খুঁজছে।
তিনি আরও বলেন, এটা কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি একটি হত্যার নামান্তর। খোলা নালায় পড়ে কারও জীবন যেন এভাবে নিভে না যায়, এমন মৃত্যুর যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয়।
হুসাইন মালিক/এফএ/জেআইএম
Advertisement