তানবীর আহমেদ (১৪) ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণির ক্লাস টপার ছিল। তানবীরের ইচ্ছা ছিল বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে চিকিৎসক হওয়ার। তার এই স্বপ্ন অপ্রত্যাশিত বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ কেড়ে নিল।
Advertisement
নিহতের বাবা অভিযোগ করে বলেন, ‘ক্লাস চলাকালীন বিমানের প্রশিক্ষণ চলায় এমন হতাহত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে ক্লাসের ফার্স্ট বয় এখন কবরে রয়েছেন।’
নিহত তানবীর আহমেদ টাঙ্গাইল মির্জাপুর উপজেলার ওয়ার্শি ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের রুবেল মিয়ার ছেলে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল ৯টায় উপজেলার ওয়ার্শি ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের স্থানীয় মাদরাসায় তানবীরের জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
দুই ভাইয়ের মধ্যে তানবীর ছিল সবার বড়। তানবীরের পড়াশুনার সুবাদে পরিবারের সবাই উত্তরায় বাসা ভাড়া করে থাকতেন। তানবীরের ছোট ভাই তাশরীফও একই স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো।
Advertisement
স্থানীয় মেম্বার আবুল কামাল জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিষ্ঠিত স্কুলে তানবীরকে ভর্তি করেছিল সুনাম করার জন্য। সরকারের কাছে আহ্বান প্রশিক্ষণ বিমানের কাছে যেন এমন বহুতল ভবন নির্মাণ না করা হয়। সরকারের ভুলে এমন দুর্ঘটনা হয়েছে। তানবীর সহজ সরল ও খুব মেধাবী ছিল।
স্থানীয় মসজিদের ইমাম সফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, তানবীর অত্যন্ত মেধাবী ও ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিল। তার এমন মৃত্যু আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। এমন দুর্ঘটনার কারণে আর কারও যাতে বাবা-মায়ের বুক খালি না হয় এ ব্যাপারে সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
তানবীরের বাবা রুবেল মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ছোট ছেলের স্কুল ছুটি হওয়ায় তাকে নিয়ে ব্যাংকে চলে আসি। তার কিছুক্ষণ পরে শুনতে চাই স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা হয়েছে। তাৎক্ষণিক এসে দেখি অনেক আহত ও নিহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তখন অনেক খুঁজাখুঁজি করেও আমার ছেলেকে পাইনি। স্কুলে এবং উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে গিয়েও তানবীরের কোনো সন্ধান পাইনি। পরে বার্ন ইউনিটে গিয়ে আমরা তার মরদেহ দেখতে পাই। তার স্কুলের বন্ধু-বান্ধব সবাই জীবিত। ক্লাস ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তার একারই মৃত্যু হয়েছে। সে জীবনে দ্বিতীয় হয়নি। কেজি থেকে ক্লাস অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তার রোল এক ছিল। প্রতিটি স্যারের প্রিয় ছিল তানবীর।
তিনি আরও বলেন, ক্লাস চলাকালীন প্রশিক্ষণ চলছিল। এটি স্কুল কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা। যার কারণে আমার ছেলেসহ আরও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। স্কুল চলাকালীন সময়ে কেন বিমানের প্রশিক্ষণ চলবে। আমি এ ঘটনায় প্রতিকার চাই। যাতে ভবিষ্যতে আর কারো এমন মৃত্যু না হয়।
Advertisement
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম আরিফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। আমরা সবাই মর্মাহত। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তানবীরের পরিবারের পাশে থাকবো।
আব্দুল্লাহ আল নোমান/এফএ/এএসএম