জাতীয়

‘আমার একটা বেস্ট ফ্রেন্ড আমার চোখের সামনেই মারা গেছে’

‘আমার একটা বেস্ট ফ্রেন্ড আমার চোখের সামনেই মারা গেছে’

উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে অনেক প্রাণহানি ঘটেছে। হাসপাতালের বেছানায় কাতরাচ্ছেন অনেকে। শিক্ষার্থীসহ অনেক মানুষের চোখের সামনেই ঘটেছে ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা উঠে এসেছে।

Advertisement

বিবিসি বাংলাকে এই দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারহান হাসান। ফারহান বলেন, ‘আগুন ধরা প্লেনটা আমার চোখের সামনেই বিল্ডিংয়ে আঘাত করছে।’

ঘটনার দিন সোমবার ফারহানের একটি পরীক্ষা ছিল। দুপুর ১টায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। এমন সময় হঠাৎ করেই বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি তাদের সামনে আছড়ে পড়ে।

তিনি বলেন, ‘আমার একটা বেস্ট ফ্রেন্ড, যে পরীক্ষার হলে একসঙ্গে ছিল, আমার চোখের সামনেই মারা গেছে।’

Advertisement

শিক্ষার্থী ফারহান আরও বলেন, ‘স্কুল গেটের ভেতরে অনেক গার্ডিয়ান দাঁড়িয়ে ছিলেন, আর ছোটরা বের হচ্ছিল ছুটির টাইমে। তখন গার্ডিয়ানদেরসহ প্লেনটা নিয়ে গেছে।’

বিধ্বস্ত হওয়ার সময় বিমানটি স্কুলের একটি ভবনে আঘাত করে। ঘটনাটি ঘটে স্কুল ছুটির ঠিক আগ মুহূর্তে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘স্কুল ছুটি হবে হবে- এমন সময় বিমানটা সরাসরি জুনিয়র সেকশনের বিল্ডিংয়ে আঘাত করে, যেখানে নার্সারি, ওয়ান, টু, থ্রি- এসব শ্রেণির ক্লাস হয়। বিল্ডিংয়ের গেটে একেবারে গর্ত হয়ে আগুন ধরে যায়।’

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েপড়া ওই ঘটনার কিছু ভিডিওতেও স্কুলের বাগান সংলগ্ন একটি ভবনের নিচতলায় বিধ্বস্ত বিমানের ইঞ্জিনে আগুন জ্বলার দৃশ্য দেখা যায়।

Advertisement

পরে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। সেই সঙ্গে চলতে থাকে উদ্ধার তৎপরতা।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) মঙ্গলবার দুপুর ২টার পর জানায়, দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা ৩১ জনের মৃত্যু ও ১৬৫ জন আহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে। আহতদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী

মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টার দিকে জাতীয় বার্ন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নাফি নামে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়।

আহতদের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ অনেককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাদের বেশিরভাগই শিশু শিক্ষার্থী।

এ ঘটনার মঙ্গলবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হয়েছে। ঘটনাটি কীভাবে ঘটলো, সেটি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

ইএ/এএসএম