জাতীয়

ই-রিকশাচালকদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির আইনগত ভিত্তি তৈরি হচ্ছে

ই-রিকশাচালকদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির আইনগত ভিত্তি তৈরি হচ্ছে

রিকশাচালকদের লাইসেন্স এবং প্রশিক্ষণ দেওয়ার ফলে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির আইনগত ভিত্তি তৈরি হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

Advertisement

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) মহাখালীতে ডিএনসিসি ই-রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের পরিদর্শন শেষে প্রশাসক এসব কথা বলেন।

এ সময় প্রশাসক প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে শৃঙ্খলা আনার লক্ষ্যে দুই সিটি করপোরেশন একযোগে ই-রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা ই-রিকশাচালকদের একটি আইনি কাঠামোর আওতায় আনতে চাই।

ডিএনসিসির এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে আজ থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় ই-রিকশা চালকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে রাজধানীর পাঁচটি ভেন্যুতে একযোগে এই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।

Advertisement

মহাখালীর ডিএনসিসি জোনাল অফিসে দুটি, মোহাম্মদপুর সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে একটি, মিরপুর ১০ এবং উত্তরায় একটি করে ভেন্যুতে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

প্রথম দিনে প্রায় ৬০০ ই-রিকশা চালক এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন। এর মধ্যে মহাখালীতেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ২৩৭ জন চালক। আগামীকাল থেকে এসব ভেন্যুতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ চলবে।

একদিনের এই প্রশিক্ষণ শেষে চালকদের পাঁচ বছর মেয়াদি ডিজিটাল ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে।

সকালে মহাখালী ভেন্যু পরিদর্শনকালে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ প্রশিক্ষণার্থী চালকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এ প্রশিক্ষণের ফলে দুর্ঘটনা কমবে এবং চালকরা আইন মানায় উৎসাহী হবেন।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে শহরে যেসব ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে, সেগুলো ধাপে ধাপে ফেজ আউট করে বুয়েটের ডিজাইন অনুযায়ী মডেলের রিকশা নামানো হবে।

প্রশিক্ষণে ই-রিকশা চালকদের ট্রাফিক আইন, সড়ক নিরাপত্তা, দুর্ঘটনার কারণ, সাইন ও সংকেত, রিকশা চালানোর কৌশল এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হচ্ছে। এই সেশনে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগও সহযোগিতা করছে।

প্রশিক্ষণের আওতায় পর্যায়ক্রমে দুই লাখ রিকশাচালককে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানান প্রশাসক। তিনি বলেন, পরে প্রতিটি অঞ্চলের জন্য ভিন্ন রঙের রিকশা অনুমোদন দেওয়া হবে। তখন একটি অঞ্চলের রিকশা আর অন্য অঞ্চলে চালানো যাবে না।

বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের নকশা অনুযায়ী ব্যাটারিচালিত ই-রিকশাগুলোর সর্বোচ্চ গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টা ৩০ কিলোমিটার। তবে নির্দিষ্ট এলাকায় এই গতিসীমা ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রণীত ‘বৈদ্যুতিক থ্রি হুইলার ব্যবস্থাপনা নীতিমালা ২০২৫ (খসড়া)’ অনুসারে, এই রিকশাগুলো শুধু পাড়া-মহল্লা ও গলিপথে চালানো যাবে, প্রধান সড়কে নয়।

প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসি অঞ্চল ৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ উল মোস্তাক এবং ডিএনসিসির পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ।

এর আগে গত ২৮ জুন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া রিকশাচালকদের প্রশিক্ষকদের (ToT) প্রশিক্ষণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে ডিএনসিসি, যা নগর পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনবে এবং নাগরিকদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করবে।

এমএমএ/এমআরএম