মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট লো এবং স্লো। এই উইকেটে রান ওঠে কম। আগের ম্যাচেই পাকিস্তান অলআউট হয়েছিল ১১০ রানে। আর আজ (মঙ্গলবার) দ্বিতীয় ম্যাচে যখন বাংলাদেশ টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারালো, তখন প্রেসবক্সেই কথা উঠলো- কোনোমতে যদি ১৩০ পার করতে পারে, তাহলে জিতবে বাংলাদেশই।
Advertisement
মিডল অর্ডারে ব্যাট করতে নামা জাকের আলী অনিকের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ভর করে (৪৮ বলে ৫৫) বাংলাদেশ যখন ১৩৩ রান তুলে ফেললো, তখন গ্যালারির সঙ্গে প্রেসবক্সেও স্বস্তি। জয়টা পাচ্ছে বাংলাদেশই। সে সঙ্গে একটি দারুণ সিরিজ জয়ও নিশ্চিত হয়ে যাবে টাইগারদের।
জবাবে পাকিস্তান ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই যখন একের পর এক উইকেট হারাচ্ছিল এবং ১৫ রানেই হারিয়ে বসেছিল গুরুত্বপূর্ণ ৫টি উইকেট, তখন তো এক প্রকার নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছিল জয় পাচ্ছে বাংলাদেশই। এরপর বিপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন খুশদিল শাহ হালকা ধরার চেষ্টা করলেন। ১৩ রান করে তিনিও আউট হলেন। দলীয় ৩০ রানে ৬ উইকেট। হেসে-খেলেই তো জয় পাচ্ছে বাংলাদেশ, এতে আর সন্দেহ করার কী আছে?
কিন্তু ক্রিকেট তো সব সময়ই গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। বিপিএলে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আরেক ক্রিকেটার ফাহিম আশরাফ যে বিপদের কারণ হতে পারেন, সেটাও আলোচনা হচ্ছিল মিরপুরের প্রেসবক্সে।
Advertisement
শেষ পর্যন্ত হলোও তাই। এই ফাহিম আশরাফই শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশের হাতের মুঠো থেকে ম্যাচটা বের করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করা ফাহিম স্বচ্ছন্দে খেলে পাকিস্তানকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিলেন। যদিও বাংলাদেশের মিসফিল্ডিংও এ ক্ষেত্রে দায়ী। ক্যাচ ড্রপ, বাউন্ডারি ছেড়ে দেওয়া। মনে হয় যেন মিস ফিল্ডিংয়ের উৎসব সাজিয়েছিল টাইগাররা।
অন্যদিকে সমানে মার খাচ্ছিলেন রিশাদ হোসেন। কিন্তু ৪ ওভারে ৪২ রান দেওয়া রিশাদই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্টটা এনে দিলেন। ১৯তম ওভারে দিলেন ১৫ রান। ৭ বলে দরকার ১৩ রান। পাকিস্তানের দলীয় রান তখন ১২১। এ সময়ই সেই টার্নিং পয়েন্টটা এনে দিলেন। তার দ্রুতগতির একটি শট লেন্থের বল দারুণ ইনসুইং করলো। ফাহিম আশরাফ পুরোপুরি পরাস্ত। বোল্ড হয়ে গেলেন তিনি। ৩২ বলে ৫১ রান করে ফিরলেন। ছক্কা মারলেন ৪টি।
ফাহিম আশরাফ যদি তখন বোল্ড না হতেন, নিশ্চিত শেষ ওভারে হেরে যেতে হতো বাংলাদেশকে। রিশাদ ৪২ রান দিলেও একমাত্র উইকেট হিসেবে ফাহিমকে তুলে নিয়েই হারিয়ে ফেলা ম্যাচটা জিতিয়ে দিলেন বাংলাদেশকে এবং সে সঙ্গে দারুণ এক সিরিজ জয় পেলো টাইগাররা।
আইএইচএস/এমএমআর
Advertisement