সানজানা রহমান যুথী
Advertisement
মাদার অব থাউজ্যান্ড প্লান্ট—যাকে বাংলায় বলা যায় ‘হাজার চারার জননী’। এটি শুধু আপনার ইনডোর গাছের সংগ্রহে অনন্য সংযোজনই নয় বরং একটি রুক্ষ পরিবেশে টিকে থাকা, কম যত্নে বড় হওয়া এক বিস্ময়কর সরস উদ্ভিদ।
উদ্ভিদটি বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন- ডেভিল’স ব্যাকবোন, মেক্সিকান হ্যাট প্ল্যান্ট বা অ্যালিগেটর প্ল্যান্ট। বৈজ্ঞানিক নাম ক্যালানকোই ল্যাটিভাইরেন্স।
ক্যালানকোই ল্যাটিভাইরেন্সের আদি নিবাস মাদাগাস্কার। এখান থেকেই এটি অন্যান্য উষ্ণ ও আধা-উষ্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে এটি বিশ্বের নানা প্রান্তে বিশেষ করে সৌখিন বাগানে ও ঘরোয়া গাছ হিসেবে জনপ্রিয়। সহজে বংশবৃদ্ধি করতে পারার কারণে এটি কোথাও কোথাও আগাছার মতোও ছড়িয়ে পড়ে।
Advertisement
এ উদ্ভিদের সবচেয়ে চমৎকার বৈশিষ্ট্য হলো, এর পাতার কিনারায় থাকা অগণিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চারা বা প্লান্টলেটস। এগুলো দেখতে ঠিক যেন পাতার ধারে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট ছোট বাচ্চা গাছের মতো—একেকটা ছোট উদ্ভিদ যেন একেকটা জীবন্ত নবজাতক।
আরও পড়ুনরাম্বুটান চাষে প্রবাসফেরত আফজাল শেখের ভাগ্যবদলনারিকেল গাছে সার দেবেন যেভাবেআশ্চর্যের ব্যাপার হলো, এ ছোট উদ্ভিদগুলো নিজেরাই শিকড় গজাতে সক্ষম এবং মূল গাছ থেকে আলাদা হয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি গাছে পরিণত হতে পারে। অনুকূল পরিবেশে গাছটি প্রায় ৩ ফুট (প্রায় ১ মিটার) পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
এ যেন এক মা উদ্ভিদ—যার প্রতিটি পাতা নিজের দেহ থেকেই জন্ম দিচ্ছে অসংখ্য নতুন প্রাণ। এজন্যই এ উদ্ভিদের নাম ‘হাজার সন্তানের জননী’। প্রকৃতির এমন মায়াময় সৃষ্টি সত্যিই মনকে মোহিত করে। যেমন তার সমস্ত আদর-ভালোবাসা দিয়ে সন্তানদের আগলে রাখে; ঠিক তেমনই এ উদ্ভিদের পাতায় জন্ম নেওয়া ছোট ছোট চারাগুলোকে রক্ষা করে।
এ গাছকে যতটা চমৎকার দেখায়, যত্ন নিতে ততটাই সহজ। এ গাছ রোদে থাকতে পছন্দ করে এবং পানিও কম লাগে। বাসার কোণে একটু সবুজ ভালোবাসার ছোঁয়া দিতে চাইলে, এটি হতে পারে এক অসাধারণ পছন্দ। ঘরের শোভা বর্ধনে ক্যালানকোই ল্যাটিভাইরেন্স অত্যন্ত জনপ্রিয়।
Advertisement
গাছটি বিড়াল, কুকুর এবং গৃহপালিত প্রাণীর জন্য বিষাক্ত। এতে থাকা বুফাডিয়েনোলাইডস নামক রাসায়নিক উপাদান খেলে বিষক্রিয়া হতে পারে। তাই গৃহপালিত প্রাণীর কাছ থেকে এটি দূরে রাখা বাঞ্ছনীয়।
তথ্যসূত্র: প্লানেট ডিজার্ট।
এসইউ/জেআইএম