ফিচার

বাংলাদেশের যত ভয়াবহ প্লেন দুর্ঘটনা

বাংলাদেশের যত ভয়াবহ প্লেন দুর্ঘটনা

প্লেন দুর্ঘটনা নতুন কিছু নয়। ভয়াবহ অনেক প্লেন দুর্ঘটনার কথা আমরা জানি। বিভিন্ন কারণে ঘটে এ ধরনের দুর্ঘটনা। অসহায়ের মতো সমর্পণ ছাড়া যেন কিছুই করার থাকে না। পাইলট-ক্রুরা হয়ে পড়েন নিরুপায়। বাংলাদেশের কয়েকটি প্লেনের ভাগ্যেও জুটেছে এমন ঘটনা। এমনকি গত ৩৪ বছরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বিমানে ৩৭টি ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। তেমন কিছু আলোচিত প্লেন দুর্ঘটনা নিয়ে আজকের আয়োজন-

Advertisement

১৯৮৪ সাল১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকায় খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে অবতরণ করার সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফকার এফ২৭-৬০০ প্লেনটি বর্তমান শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি একটি জলাভূমির মধ্যে ক্র্যাশ করে। প্লেনটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বিমানবন্দর থেকে পূর্বনির্ধারিত ঘরোয়া যাত্রী ফ্লাইট পরিচালনা করছিল। এতে ৪ জন ক্রু ও ৪৫ জন যাত্রীসহ সবাই নিহত হন।

১৯৯৭ সাল১৯৯৭ সালের ২২ ডিসেম্বর ৮৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ফকার এফ২৮-৪০০০ মডেলের প্লেনটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি-৬০৯ ঢাকা থেকে সিলেট যাচ্ছিল। সিলেট বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময় কুয়াশার কারণে রানওয়ের পাদদেশ থেকে ৫ থেকে সাড়ে ৫ কিলোমিটার দূরে উমাইরগাঁও নামক স্থানের একটি ধানক্ষেতে বিধ্বস্ত হয়। এতে ১৭ জন যাত্রী অহত হন।

২০০৪ সাল২০০৪ সালের ৮ অক্টোবর আবারও সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনা ঘটে। এটিও ১৯৯৭ সালে দুর্ঘটনার কবলে পড়া প্লেনের মডেলের অনুরূপ ফকার এফ২৮-৪০০০ মডেল। সেদিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি-৬০১ ঢাকা থেকে সিলেট যাচ্ছিল। অবতরণের পর রানওয়ে ভেজা থাকার কারণে বিমানটি রানওয়ে থেকে ছিটকে খাঁদে পড়ে যায়। এতে ৭৯ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রুর মধ্যে ২ জন যাত্রী আহত হন।

Advertisement

২০১৫ সাল২০১৫ সালের আগস্ট মাসে সিলেট বিমানবন্দরের রানওয়েতে দুর্ঘটনা ঘটে। সেদিন দুবাই থেকে সরাসরি আসা প্লেনে ২২০ জন যাত্রী ছিলেন। ওই সময় বিজি-৫২ প্লেনের ডানদিকের ইঞ্জিনের ভেতর পাখি ঢুকে পড়ে। তখন চারটি ব্লেড ভেঙে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। সেদিন সকাল ৭টায় রানওয়েতে অবতরণের সময় এ ঘটনা ঘটে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

আরও পড়ুন ব্ল্যাক বক্স কি আসলেই কালো?  যা থাকে বিমানের ব্ল্যাক বক্সে 

২০১৫ সাল২০১৫ সালের ৯ মার্চ কক্সবাজারে একটি কার্গো প্লেন বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয়। সে ঘটনায় পাইলটসহ ৩ জন নিহত হন। উড্ডয়নের ৫ মিনিটের মাথায় সাগরে আছড়ে পড়ে বিমানটি।

২০১৮ সাল২০১৮ সালের ১২ মার্চ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (টিআইএ) ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী একটি প্লেন বিধ্বস্ত হয়। ৬৭ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রুবাহী প্লেন থেকে ১৭ যাত্রীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় প্রায় ৫০ জনের প্রাণহানীর আশঙ্কা প্রকাশ করে টিআইএ।

বিমান বাহিনীর যত দুর্ঘটনা১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিমান বাহিনীর বেশ কিছু প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। গত ৩৪ বছরে ৩৭টির মতো বিমান দুর্ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ২২ জনের প্রাণহানী ঘটে। তারা কেউ পাইলট, প্রশিক্ষক, স্কোয়াড্রন লিডার, ফ্লাইট লেফট্যানেন্ট, ফ্লাইট ক্যাডেট ছিলেন। বিমান বাহিনীর বেশিরভাগ দুর্ঘটনা প্রশিক্ষণ চলাকালেই ঘটে।

Advertisement

উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত ২০২৫ সালের ২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১৬৫ জন। বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত হন পাইলট তৌকির ইসলাম।

এসইউ/জিকেএস