জাতীয়

স্কুল ভবনে কত শিক্ষার্থী ছিল, কারও কাছেই তথ্য নেই

স্কুল ভবনে কত শিক্ষার্থী ছিল, কারও কাছেই তথ্য নেই

উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনের ওপর বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে নানা তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে। মৃতের সংখ্যা সঠিকভাবে জানানো হচ্ছে না অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল থেকে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। এ সুযোগে অনেক ভুয়া ও অপতথ্যও ছড়ানো হচ্ছে।

Advertisement

প্রশিক্ষণ বিমানটি যখন মাইলস্টোনের স্কুল শাখার হায়দার আলী অ্যাকাডেমিক ভবনের ছাদে আছড়ে পড়ে, তখন সেখানে কতজন শিক্ষার্থী ছিল; সে তথ্য এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ নিয়ে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি এ নিয়ে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারছে না।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অন্তত তিনজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছে জাগো নিউজ, তারা প্রত্যেকে ঘটনার সময়ে ক্যাম্পাসে ছিলেন। তারা জানান, হায়দার আলী অ্যাকাডেমিক ভবনে তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস হয়। দ্বিতীয় শিফটে অনেক শ্রেণির ক্লাস শেষ হয়েছিল। কিছু শিক্ষার্থীকে তাদের অভিভাবকরা নিয়ে বের হয়ে গিয়েছিল, কিছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবক একসঙ্গে ছিলেন। অনেকে আবার তখনও শ্রেণিকক্ষে ছিল।

তবে তারা কেউ কোচিং করার জন্য অপেক্ষা করছিল না বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, অনেকে বলছেন, কোচিংয়ের জন্য শিক্ষার্থীরা বসে ছিল। আসলে এটা সঠিক নয়। স্কুল ছুটির সময় ছিল ১টা ৩০ মিনিট। তবে অনেক ক্লাসের শিক্ষকরা একটু আগেই ক্লাস শেষ করে বেরিয়ে যান। সেসব ক্লাসের শিশুরা ক্লাস থেকে বেরিয়ে পড়েছিল। আর কিছু ক্লাসে শিক্ষার্থীরা ভেতরে ছিল।

Advertisement

বুলবুল আহমেদ বলেন, বিমান বিধ্বস্ত হয়ে যেখানে পড়েছে, সেটা মূলত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাসরুম। দুটি ক্লাসে কমপক্ষে ৩০ জন করে ৬০ জন শিক্ষার্থী ছিল। তার মধ্যে অল্প কয়েকজন হয়তো বাইরেও ছিল।

কতসংখ্যক শিক্ষার্থী ওই ভবনে ক্লাস করেন জানতে চাইলে তিনি ‘সুনির্দিষ্ট’ তথ্য দিতে পারেননি। তার ভাষ্য, ক্লাসে তো খাতায় হাজিরা নেওয়া হয়। সোমবার কত শিক্ষার্থী ক্লাসে এসেছিল সেই তথ্য নেই। ক্লাস শেষ; ছুটির সময় হয়ে গেছে; ফলে অনেকে বেরিয়ে পড়েছে। এজন্য একেবারে নির্দিষ্ট করে কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।

তবে কেউ নিখোঁজ থাকলে কর্তৃপক্ষ সেই তথ্য নিচ্ছে এবং সহায়তা করছে বলে জানান বুলবুল আহমেদ। তিনি বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসের ৪ নং অ্যাকাডেমিক ভবনে এ নিয়ে অভিভাবকরা তথ্য দিতে পারবেন। সেখানে আমাদের একটা সেল কাজ করছে।

মঙ্গলবার ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের কাছে স্কুলের মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা থাকে। ক্লাস ধরে ধরে তথ্য আমরা পাইনি। ঘটনার পর আমাদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে। তারা (মাইলস্টোন) কোনো সাড়া দেয়নি।’

Advertisement

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও বিষয়টি নিয়ে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের মাধ্যমিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা। তবে এখনও সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

এদিকে, মাইলস্টোনে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। তাদের মধ্যে ২৫ জনই শিশু, যাদের বয়স ১২ বছরের নিচে। দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৭৮ জন। তাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।

এএএইচ/এসএনআর/জেআইএম