রাজনীতি

‘গোপালগঞ্জ মানে শুধু আওয়ামী লীগ নয়’

‘গোপালগঞ্জ মানে শুধু আওয়ামী লীগ নয়’

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে সহিংসতায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সহিংসতার জেরে আজ রোববার (২০ জুলাই) ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ ছিল। সংঘর্ষের ঘটনায় তিন হাজার ৪ জনকে আসামি করে চারটি মামলায় এ পর্যন্ত গ্রেফতার ২৮৩ জন। সহিংসতার ঘটনায় প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন বিএনপির স্থানীয় নেতারা। তবে সাধারণ নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার ও হয়রানির ঘটনায় উদ্বিগ্ন তারা।

Advertisement

সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। কারফিউ উঠে যাওয়ায় বেড়েছে সাধারণ মানুষের চলাচল, খুলেছে দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যদিও সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে চার মামলায় আসামি ৩ হাজার, গ্রেফতার ২৮৩ প্রয়োজনে মরদেহ কবর থেকে তোলা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর গাড়ি দিয়ে যেভাবে উদ্ধার করা হলো নাহিদ-হাসনাতদের

সম্প্রতি সহিংসতার ঘটনায় গোপালগঞ্জ-১ আসনের বিএনপির নেতা (কেন্দ্রীয় সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক) ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেসবাহ প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি খোলা চিঠি লেখেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের এনসিপির মিটিংয়ে হামলা, মঞ্চ ভাঙচুর, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা এবং সরকারি-বেসরকারি সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করা হোক-এটাই চাই। তবে গ্রেফতারের নামে নিরীহ দোকানদার, ভ্যানচালক, কৃষক ও দিনমজুরদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ এসেছে। আমরা চাই নিরীহদের গ্রেফতার বন্ধ হোক’।

তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘গ্রেফতারের আগে রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই করা হোক এবং ব্যক্তি বিশেষের শত্রুতা কাজে লাগিয়ে পুলিশ যেন নিরীহদের হয়রানি না করে’।

Advertisement

একই আসনের বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘গোপালগঞ্জ জেলা ও বাংলাদেশের অন্যান্য জেলা থেকে আগত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের পেটোয়া বাহিনী বর্বরোচিত হামলা, জেলখানায় হামলা, ডিসি-এসপি অফিসে হামলা, পুলিশ ও প্রশাসনের ওপর আগ্রাসন চালিয়েছে। এসব দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। কিন্তু প্রশাসন যেন মুকসুদপুর-কাশিয়ানীসহ পুরো গোপালগঞ্জের নিরীহ মানুষদের ওপর কোনো জুলুম না করে’।

আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে হামলার নেপথ্যদেরও ছাড় নয়: ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি গোপালগঞ্জে অন্যায়কারীদের ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না গোপালগঞ্জের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি

গোপালগঞ্জ-২ আসনের স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরদার মো. নুরুজ্জামান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘গতকাল থেকে গোপালগঞ্জের অনেকেই ফোন করে বলছেন, অধিকাংশই নিরপরাধ মানুষ, অথচ গ্রেফতার হচ্ছেন! প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি, প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনুন; নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করবেন না। গোপালগঞ্জ মানে শুধু আওয়ামী লীগ নয়, এখানে হাজারো জাতীয়তাবাদী আদর্শের মানুষ রয়েছেন’।

আরও এক স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, ‘যারা গোপালগঞ্জকে অশান্ত করেছে, তাদের মুখোশ জনগণ চিনে ফেলেছে। আমরা চাই গোপালগঞ্জ আবার শান্ত হোক, ভালো থাকুক এখানকার মানুষ’।

গোপালগঞ্জ-৩ আসনের স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তাতে পাঁচ থেকে সাত হাজার লোক জড়িত ছিল বলে নানা সূত্র বলছে। কিন্তু গোপালগঞ্জে তো লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস করেন। তারা সবাই তো জড়িত নন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ, গ্রেফতার করতে গিয়ে যেন সাধারণ নিরপরাধ মানুষ হয়রানির শিকার না হন’।

Advertisement

কেএইচ/এসএনআর/এএসএম