উপকূলীয় অঞ্চলের দীর্ঘদিনের সুপেয় পানির সংকট সমাধানে নতুন আশার আলো জাগাচ্ছে তরুণদের উদ্ভাবনী উদ্যোগ। লবণাক্ততার বিস্তার, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যে সংকট দিন দিন তীব্র হচ্ছে, তা মোকাবিলায় এবার তরুণদের ভাবনা ও প্রযুক্তিকে প্ল্যাটফর্ম করে আয়োজন করা হয় ‘ব্র্যাক-আইআরসি ওয়াটার হ্যাকাথন’।
Advertisement
শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাক, আন্তর্জাতিক পানি ও স্যানিটেশন কেন্দ্রের (আইআরসি) অংশীদারত্বে এবং নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের (ইকেএন) আর্থিক সহায়তায় আয়োজিত এ হ্যাকাথনের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের তরুণ প্রকৌশলী, ডিজাইনার, সামাজিক উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তিবিদরা।
হ্যাকাথনে প্রথম পুরস্কার অর্জন করেন শ্যাম শঙ্করন, তার প্রকল্প “প্রজেক্ট জলবন্ধু – অ্যা স্মার্ট, কমিউনিটি-ড্রিভেন ওয়াটার গ্রিড; পাওয়ারড বাই প্যাডেলস, পয়েন্টস অ্যান্ড পার্টিসিপেশন”-এর জন্য। বিচারকদের মতে, প্রকল্পটি বাস্তবভিত্তিক, সাশ্রয়ী এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে এএমসিসি দলের প্রকল্প “অ্যাটমসফেরিক ময়েশ্চার ফর কোস্টাল কমিউনিটি”, যা স্বাতন্ত্র্যপূর্ণ ধারণা ও বাস্তবায়নের উপযোগিতার কারণে বিচারকদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে। দলটির সদস্যরা হলেন মিফতাহুল জান্নাত লাবিবা, মো: জাহিদুল আলম এবং ড. পার্থ দাস।
Advertisement
হ্যাকাথনের জন্য জমা পড়ে ২৫০টিরও বেশি প্রকল্প প্রস্তাব, যা তরুণদের জলবায়ু সহনশীল সমাধানে আগ্রহের প্রতিফলন। মূল্যায়নের মাধ্যমে ১১টি প্রকল্প চূড়ান্ত পর্বে উপস্থাপনের সুযোগ পায়।
বিচারক প্যানেলে ছিলেন ড. শিবলী সাদিক, এ.এইচ.এম খালেকুর রহমান, ড. সুফিয়া খানম, ড. তানভীর আহমেদ, আরিয়েন নাফস, মো. জিল্লুর রহমান এবং সারা আফরিন। বিচারকদের মতে, প্রকল্পগুলো শুধু প্রযুক্তিনির্ভর নয়, এতে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও গুরুত্ব পেয়েছে।
আয়োজকরা জানান, বিজয়ী প্রকল্পগুলো উপকূলীয় অঞ্চলের কয়েকটি নির্বাচিত এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, যাতে কারিগরি সম্ভাব্যতা, স্থানীয় প্রেক্ষাপটে কার্যকারিতা এবং বৃহৎ পরিসরে প্রয়োগযোগ্যতা যাচাই করা যায়।
উপকূলের চিরস্থায়ী পানি সংকটের মাঝে তরুণদের এমন চিন্তা ও উদ্ভাবন এক নতুন আশার আলো হয়ে উঠছে—যা ভবিষ্যতের টেকসই সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
Advertisement
জেপিআই/এমএএইচ/