ক্যাম্পাস

লাল কাপড়ে ঢেকে গেলো শহীদ আবু সাঈদ ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’

লাল কাপড়ে ঢেকে গেলো শহীদ আবু সাঈদ ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সামনে শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে স্থাপিত ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্পে’ জন্মতারিখসহ তথ্যগত নানা অসংগতি সামনে এসেছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর লাল কাপড় দিয়ে সেটি ঢেকে দিয়েছেন তার সহযোদ্ধারা। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

শুক্রবার (১৮ জুলাই) দুপুরে শিক্ষার্থীরা স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদতবার্ষিকীতে আবু সাঈদ স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকের সামনে ‘স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্প’ স্থাপন করা হয়। এটি বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় (এলজিইডি)। গত বছরের ১৬ জুলাই আবু সাঈদ এই ফটকের সামনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন।

সরজমিনে দেখা যায়, স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্পে লেখা হয়েছে, ‘রংপুরের ছেলে শহীদ আবু সাঈদ। জালেম ও জুলুমের বিরুদ্ধে যার শির ছিল চির উন্নত। তিনি বলতেন, ‘প্রয়োজনে শহীদ হব, তবু মাথা নত করব না।’ ১৬ জুলাই আসমানের দিকে দুই হাত প্রসারিত করে শাহাদাত বরণ করলেন। এরপরই সারা বাংলাদেশ জেগে ওঠে অনন্ত বিপ্লবের ওয়াদা নিয়ে।’

Advertisement

তথ্য বিভ্রান্তি থাকা মেমোরি স্ট্যাম্পের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আবু সাঈদের সহযোদ্ধা বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সমন্বয়ক শামসুর রহমান, সমন্বয়ক আরমান হোসেন ও আবু সাঈদের বাল্যবন্ধু মাহিদ হাসান সেটি লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন।

ক্ষোভ প্রকাশ করে ইয়ামিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, শহীদ আবু সাইদের জন্ম তারিখ ও বিপ্লবের ইতিহাস বিকৃতি করে লেখা হয়েছে , শহীদ আবু সাঈদ মেমোরি স্ট্যাম্পটি লাল কাপড়ে আবৃত করে দিলাম। অতি দ্রুত এই স্থাপনাটির লেখা পরিবর্তন চাই। ইতিহাস বিকৃতকারীদের শাস্তি চাই।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আরমান হোসেন বলেন, ‘আবু সাঈদের মৃত্যু এবং তার সম্পর্কিত সবকিছু দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। সুতরাং এটি নিয়ে ভুল হওয়ার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। তার যে ইতিহাস, সেটাকে কোনোভাবে বিকৃত বা খামখেয়ালিভাবে লেখা হোক, সেটা আমরা চাই না।’

আবু সাঈদের সহযোদ্ধা আরেক সমন্বয়ক শামসুর রহমান বলেন, ‘প্রথমত আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থী, সেটা সেখানে লেখা হয়নি। দ্বিতীয়ত শহীদ আবু সাঈদের দুই হাত প্রসারিত ছিল; কিন্তু সেখানে লেখা, দুই হাত আসমানের দিকে করা। এটা যে স্পষ্টত পুলিশি হত্যাকাণ্ড, সেটা সেখানে নেই।’

Advertisement

তিনি বলেন, আবু সাঈদের জন্ম ২০০০ সালের ১০ ডিসেম্বর। কিন্তু সেখানে ২০০১ সালের ১ জানুয়ারি লেখা হয়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. হারুন-অর রশিদ বলেন, স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্পটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়েছিল। উদ্বোধনের আগে সেটি ঢাকা ছিল। তারা দেখতে পারেননি। ভুল তথ্যের কারণে শিক্ষার্থীরা সেটি গ্রহণ করেননি। এটা আবার ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তারা ভুল সংশোধনের চেষ্টা করছেন।

‎এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেনি। মিনিস্ট্রি অফিসে জানানো হয়েছে, শিক্ষার্থীরাও জানিয়েছে। এখন খুব দ্রুত সংশোধন করা হবে।

ফারহান সাদিক সাজু/এমএন/এমএস