বাংলাদেশের ব্যাংক খাত দীর্ঘদিন ধরেই কাঠামোগত দুর্বলতা, খেলাপি ঋণের বিস্তার, সুশাসনের ঘাটতি ও জনগণের আস্থার সংকটে জর্জরিত। বিগত সরকারের শেষ সময়গুলোতে আর্থিক খাতের ভিত অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে পড়ে। যেখানে ঋণ খেলাপি হয়ে ওঠে ব্যাংক খাতের ‘বিষফোড়া’। ঋণের খেলাপি বাড়লেও নানা কায়দায় তা গোপন রাখার প্রবণতাও ছিল।
Advertisement
বিগত বছরগুলোতে বেনামি ও কাগুজে ঋণের কারণে ভেঙে পড়ে ইসলামী খাতের একাধিক ব্যাংক। পর্ষদে অযোগ্য লোক বসিয়ে করা হতো অর্থ বাণিজ্য। এসব সংকট কাটিয়ে উঠতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এরই মধ্যে নানামুখী সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। সেসব উদ্যোগের কিছু বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংস্কারের কার্যক্রম শুরু হলেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি এখনো পুরোপুরি দৃশ্যমান নয়। এর সুফল পেতে সময় লাগবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে—বাণিজ্যিক ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন, ব্যাংকিং টাস্কফোর্স গঠন, ডলার বাজারে হস্তক্ষেপ ও স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আর্থিক নীতির কড়াকড়ি ও ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি ব্যবস্থার প্রস্তুতি।
ব্যাংক খাতে টেকসই পরিবর্তন আনতে সময়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন। তার মতে, ‘ভালো পরিকল্পনা থাকলেও রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও কার্যকর বাস্তবায়ন ছাড়া এসব উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে না।- গভর্নর
Advertisement
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্পষ্ট করে বলেছেন, ব্যাংক খাতে টেকসই পরিবর্তন আনতে সময়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন। তার মতে, ‘ভালো পরিকল্পনা থাকলেও রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও কার্যকর বাস্তবায়ন ছাড়া এসব উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে না।’
বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে নতুন চ্যালেঞ্জবিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতা, যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ নীতি, বৈশ্বিক ঋণের সুদহার বৃদ্ধি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর মুদ্রার বিপরীতে ডলারের দরপতন এবং বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক সতর্কবার্তা বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ বেড়ে ২৭,১৮৯ কোটি টাকা বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে কমেছে বাংলাদেশের হিস্যা মার্কিন শুল্কে ‘ঝুঁকির শঙ্কা’, দ্রুত পদক্ষেপ চান ব্যবসায়ীরাবিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখনই গভীর সংস্কার প্রয়োজন। যার মধ্যে রয়েছে—খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংক একীভূতকরণ বা মার্জার, পরিচালন কাঠামোতে স্বচ্ছতা এবং প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবার ওপর জোর দিতে হবে। এর মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব। সর্বোপরি এ খাতের ওপর জনগণের আস্থা ফেরানোর বিকল্প নেই।
Advertisement
অর্থনীতিবিদদের মতে, সবকিছুই ব্যর্থ তা বলা যাবে না। বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনও ঘটেছে। উল্লেখযোগ্য কিছু অগ্রগতি হলো—আইনগত কাঠামো শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা, প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি (ডিজিটাল ব্যাংকিং, অনলাইন রিপোর্টিং সিস্টেম), তারল্য সংকটে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা, তদারকি ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনতে নতুন নির্দেশনা এবং দুর্বল ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম মূল্যায়ন।
খেলাপি ঋণ, দুর্বল ব্যাংকসমূহ একীভূতকরণের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ব্যাংক খাতে আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। ফলে ব্যাংক ঋণ, আইনি বিধিবিধান, বাজার, পরিচালনা ও কৌশলগত ঝুঁকি কার্যকরভাবে চিহ্নিত করা সহজ হবে।- এম হেলাল আহমেদ জনি
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি বড় পদক্ষেপ হচ্ছে, ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি চালুর সিদ্ধান্ত। এর ফলে ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি চিহ্নিত করা, ম্যানেজমেন্ট মূল্যায়ন ও তদারকির ধারা আরও সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর হবে।
চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ রিসার্চ ফেলো ও অর্থনীতিবিদ এম হেলাল আহমেদ জনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ফলাফল একেবারেই আসেনি তা বলা যাবে না। বেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন অবশ্যই লক্ষ্যণীয়। যেমন- আইনগত কাঠামো শক্তিশালীকরণের চেষ্টা, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, নজরদারি বৃদ্ধি ও জোরদারকরণ, তারল্য সহায়তা প্রদান ইত্যাদি।’
‘তবে এক্ষেত্রে খেলাপি ঋণ, দুর্বল ব্যাংকসমূহ একীভূতকরণের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ব্যাংক খাতে আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। ফলে ব্যাংক ঋণ, আইনি বিধিবিধান, বাজার, পরিচালনা ও কৌশলগত ঝুঁকি কার্যকরভাবে চিহ্নিত করা সহজ হবে’- বলেন এ অর্থনীতিবিদ।
প্রধান প্রতিবন্ধকতা: রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাবিশ্লেষকদের মতে, ব্যাংক খাতে কাঠামোগত সংস্কারের পথে সবচেয়ে বড় বাধা রাজনৈতিক অঙ্গীকারের ঘাটতি। অনেক সময় রাজনৈতিক প্রভাব বা প্রভাবশালী পরিচালকগোষ্ঠীর হস্তক্ষেপ সংস্কার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে।
দেশের ব্যাংক খাত বর্তমানে এক ধরনের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে নীতিনির্ধারকদের সংস্কার উদ্যোগ, অন্যদিকে বাস্তবায়নে ধীরগতি ও কাঠামোগত দুর্বলতা। সামনের দিনগুলোতে সত্যিকার অর্থে পরিবর্তন আনতে হলে প্রয়োজন—রাজনৈতিক সদিচ্ছা, কার্যকর বাস্তবায়ন, নিয়মতান্ত্রিক তদারকি এবং সর্বোপরি জনগণের আস্থা ফেরানো।
অনেকে টাকা-পয়সা নিয়ে দেশের বাইরে চলে গেছে। বিশ্বের অন্য কোনো দেশে এমন নজির নেই। দায়িত্ব নিয়ে আমরা কিছু সংস্কার এনেছি। তবে ব্যাংক খাতে কিছু সংস্কার সময়সাপেক্ষ।- অর্থ উপদেষ্টা
অর্থনীতিবিদ এম হেলাল আহমেদ জনি বলেন, ‘রাজনৈতিক ঝুঁকি এক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হতে পারে। ভালো পরিকল্পনা নিলেও রাজনৈতিক দৃঢ় অঙ্গীকার ছাড়া বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারের সদিচ্ছা ও বাস্তবায়নের ওপর।’
ঘরের টাকা ফের ফিরছে ব্যাংকেকেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের মার্চের তুলনায় এপ্রিলে মানুষের হাতে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ কমেছে ১৯ হাজার ৬৪ কোটি ৭ লাখ। গত ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে মানুষের হাতে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছিল ২৪ হাজার ৯৩৬ কোটি। পাশাপাশি এপ্রিলে ছাপানো টাকা (রিজার্ভ মানি) কমেছে ২২ হাজার ৮৮ কোটি এবং বাজারে প্রচলিত টাকা (কারেন্সি ইন সার্কুলেশন) কমেছে ১৮ হাজার ৪৭৬ কোটি ৬ লাখ।
বেড়েছে আমানতচলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা আমানত বেড়েছে ব্যাংক খাতে। গত মার্চ শেষে আমানতের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ২৩ হাজার ৫০৬ কোটি টাকায়। গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে ব্যাংকে সাড়ে ৩৪ হাজার কোটি টাকা আমানত বেড়েছিল। তাতে গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে আমানতের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭১১ কোটি টাকা।
সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে সুদসহ আমানত বেড়েছে ৩৯ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা বা ২ শতাংশের বেশি। যদিও আর্থিক অনিশ্চয়তায় আমানতকারীরা গত বছর ১০টি ব্যাংক থেকে মোট ২৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছিলেন। যা অন্য ব্যাংকগুলোতে রাখা হয়েছিল। এতে কিছু ব্যাংকে আমানতের প্রবৃদ্ধি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি।
বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমেছে২০২৫ সালের মে শেষে বার্ষিক ভিত্তিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ৬.৯৫ শতাংশে নেমেছে, যেখানে এক বছর আগে এ হার ছিল ১০.৩৫ শতাংশ। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি এক বছরের ব্যবধানে ৩.১৪ শতাংশ কমেছে। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে এ হার ছিল ৭.১৫ শতাংশ, আর করোনা পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালের মে মাসে একবার ৭.৫৫ শতাংশে নেমেছিল।
প্রকাশ্যে খেলাপি ঋণদেশে একটি উদ্বেগের বিষয় খেলাপি ঋণ এবং বেশ কয়েক বছর ধরেই এটি একটি রেকর্ড তৈরি করেছে। বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ চার লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি, যা মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ২৪.১৩ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলছেন, ‘বিগত সময়ে কার্পেটের নিচে লুকিয়ে রাখা খেলাপির বাস্তব চিত্র এখন প্রকাশ পাচ্ছে।’
কমছে মূল্যস্ফীতিজুনে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়েছে, যা ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ২০২২ সালের জুলাইয়ে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল। এরপর গত জুনের মতো এত কম মূল্যস্ফীতি আর দেখা যায়নি। এ নিয়ে চার মাস ধরে মূল্যস্ফীতি কমলো। গত জুনে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয় ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
আমানতকারীর আমানত ফেরাতে উদ্যোগকয়েকটি ইসলামী খাতের ব্যাংক থেকে এখনো প্রয়োজন মতো আমানত ফিরে পাচ্ছেন গ্রাহক। খুবই দুর্বল অবস্থায় রয়েছে এসব ব্যাংক। এই ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এ উদ্যোগের ফলে আমানতকারীরা তাদের আমানত ফিরে পাবেন। কারণ, একীভূত করে সরকার নিয়ে নিবে ব্যাংক, পরবর্তীতে ভালো বিনিয়োগকারী পেলে তাদের দেওয়া হবে। এতে আমানতকারীরা আমানত হারাবে না।
গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ইসলামী ধারার দুর্বল কয়েকটি ব্যাংক একীভূত করা হবে। এজন্য আমরা ছয়টি ব্যাংকের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করবো। তারা যদি সঙ্গত কারণ দেখাতে পারে, তাহলে মার্জ হবে না। ছয়টি ব্যাংকই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আর এজন্যই তাদের মার্জের (একীভূত) সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
সংস্কার নিয়ে সরকার যা বলছেগত শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অনেকে টাকা-পয়সা নিয়ে দেশের বাইরে চলে গেছে। বিশ্বের অন্য কোনো দেশে এমন নজির নেই। দায়িত্ব নিয়ে আমরা কিছু সংস্কার এনেছি। তবে ব্যাংক খাতে কিছু সংস্কার সময়সাপেক্ষ। সব সংস্কার আমরা শেষ করতে পারবো না। একটি ফ্রুট প্রিন্ট রেখে যাবো, নির্বাচিত সরকার এসে করবে।’
আরও পড়ুন
রপ্তানির ৭০ শতাংশ আয় ১০ দেশ থেকেই, বাড়ছে ঝুঁকি নিরীক্ষা দুর্বলতায় অর্থপাচার ও ঋণ খেলাপি সহজ হয়েছে ব্যাংক খাতে প্রভিশন ঘাটতি ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকাতিনি বলেন, ‘যেসব ব্যাংক খারাপ সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সেগুলো পুনর্বাসন করছে। এর মধ্যে অন্যতম উদাহরণ ইসলামী ব্যাংক। অন্য ব্যাংকগুলোর জন্য একটি আইন হয়েছে। ব্যাংক রেজল্যুশন অ্যাক্টের অন্যতম শর্ত হলো যারা বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা-পয়সা জমা দিয়েছে, তাদের টাকা-পয়সা ফেরত দেওয়ার জন্য সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।’
গভর্নর বলেন, ‘বোর্ড পুনর্গঠন, ব্যাংকিং টাস্কফোর্স গঠন, ডলার বাজারে হস্তক্ষেপ ও স্থিতিশীলতা আনাসহ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু হয়েছে। ফলাফলও ভালোর দিকে, ডলার বাজার স্থিতিশীল, মূল্যস্ফীতি কমে ৮ এর ঘরে এসেছে, ইসলামী ব্যাংক নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সংস্কারে ব্যাংক খাতের তদারকিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে।’
‘আগামী বছরের শুরু থেকে চালু হচ্ছে ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি ব্যবস্থা আরবিএস বা রিস্ক বেইজড সুপারভিশন। যেখানে তদারকি হবে আরও আধুনিক, কার্যকর ও তথ্যভিত্তিক। তবে রাজনৈতিক গুণগত পরিবর্তন, হস্তক্ষেপ বন্ধ না হলে কোনো নীতিমালা কাজে আসবে না’- বলেন তিনি।
অর্থনীতিবিদ এম হেলাল আহমেদ জনি বলেন, ‘ব্যাংক খাত সংস্কারে ইতিবাচক অগ্রগতি হলেও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। ব্যাংক খাতে সংস্কারের কিছু ফল ইতোমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। আইনগত কাঠামো শক্তিশালীকরণ, প্রযুক্তির উন্নয়ন, নজরদারি বৃদ্ধি ও তারল্য সহায়তা এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। আগামী জানুয়ারি থেকে ঝুঁকি ভিত্তিক তদারকি ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে ব্যাংক খাতের বিভিন্ন ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ আরও কার্যকর হবে। তবে খেলাপি ঋণ, দুর্বল ব্যাংক একত্রিকরণ এবং রাজনৈতিক ঝুঁকি বড় চ্যালেঞ্জ। সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও অঙ্গীকার অপরিহার্য।’
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘অনেক সমস্যার মধ্যে একটি ছিল উচ্চ মূল্যস্ফীতি। এখন কমতে শুরু করেছে। যদিও চালের বাজার এখনো চড়া। মূল্যস্ফীতির কারণে ক্রয়ক্ষমতা, জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দিয়েও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কাঠামোগত পরিবর্তন শুরু হলে ফল পেতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।’
ইএআর/এমকেআর/এএসএম