আন্তর্জাতিক

আফগানদের সঙ্গে বেহাত হয়েছে ব্রিটিশ গুপ্তচরদের তথ্যও

আফগানদের সঙ্গে বেহাত হয়েছে ব্রিটিশ গুপ্তচরদের তথ্যও

যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-সিক্স ও স্পেশাল ফোর্সের সদস্যসহ ১০০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ কর্মকর্তার গোপনীয় তথ্য চুরির ঘটনা ঘটেছে। হাজার হাজার আফগান নাগরিকের তথ্যের সঙ্গে এসব কর্মকর্তার নাম-পরিচয়ও ফাঁস হয়ে গেছে।

Advertisement

এ ঘটনার কারণে সৃষ্ট বিপর্যয় ও তার সর্বশেষ পরিণতি সম্পর্কে তথ্য একটি নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে গোপন রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) হাইকোর্টের একজন বিচারক আংশিকভাবে ওই আদেশটি প্রত্যাহার করেন। যার ফলে মিডিয়া সংস্থাগুলোও ঘটনাটি প্রকাশ করতে পেরেছে। যেখানে বলা হয়, ডাটাবেজে থাকা বিস্তারিত কেসনোটগুলোয় বিশেষ বাহিনী এবং গুপ্তচরদের গোপন ব্যক্তিগত তথ্য রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের সরকার এরই মধ্যে স্বীকার করেছে, আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের সঙ্গে কাজ করা ও যুক্তরাজ্যে পুনর্বাসনের জন্য আবেদনকারী প্রায় ১৯ হাজার আফগানের তথ্য অসাবধানতাবশত ফাঁস হয়ে গেছে।

সংঘাতের সময় ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে কাজ করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার দাবি জানিয়েছিল তালেবানরা, তাই অনেকেরই গুরুতর ক্ষতি এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল বলেও জানানো হয়েছিল। এ কারণেই তাদের তথ্যভাণ্ডার তথাকথিত ‘সুপার-ইনজাংশন. বা বিশেষ নিষেধাজ্ঞা দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। এটি এমন এক ধরনের আদেশ, যা এর অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রতিবেদন করতেও বাধা দেয়।

Advertisement

তথ্যটি জানতে পেরে আফগানিস্তানের একজন ব্যক্তি এর কিছু অংশ ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন ও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে তিনি বাকিগুলোও প্রকাশ করতে পারেন। অথচ তথ্য ফাঁসের এই ঘটনাটি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঘটলেও ২০২৩ সালের অগাস্ট পর্যন্ত সরকার তা বুঝতেই পারেনি।

বুধবার (১৬ জুলাই) বিবিসি জানতে পারে যে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ওই ব্যক্তির আবেদন পর্যালোচনা করার কাজটি দ্রুত নিষ্পন্ন করার প্রস্তাব দিয়েছে ও তথ্য পোস্ট করার পরে তাকে দেশে নিয়ে এসেছে। এমন ধারাবাহিক কয়েকটি ঘটনাকে মূলত ‘ব্ল্যাকমেইল’ বলে দাবি করেছে সরকারি সূত্রগুলো।

ওই ব্যক্তির কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে তারা বলেছে, আফগান নাগরিকদের স্থানান্তর প্রকল্পের অধীনে যদি কেউ যুক্তরাজ্যে আসে, তাহলে তাকে ‘প্রবেশের জন্য কঠোর নিরাপত্তা পরীক্ষা’ দিতে হবে।

২০২৩ সালে এই তথ্য ফাঁসের ঘটনা সামনে আসার পর যুক্তরাজ্য সরকার গোপনে আফগানিস্তান রেসপন্স রুট (এআরআর) প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য হয়, যা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি পুনর্বাসন প্রকল্প, যাদের নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তথ্য ফাঁসের বিষয়ে জানানো হয়নি।

Advertisement

এই প্রকল্পটি এরই মধ্যে সাড়ে চার হাজার আফগান ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে স্থানান্তরের অনুমতি দিয়েছে। সেই সঙ্গে আরও দুই হাজার ৪০০ জনকে যুক্তরাজ্যে স্থানান্তরিত করার সম্ভাবনা রয়েছে, যাতে আনুমানিক ব্যয় হবে ৮৫০ মিলিয়ন পাউন্ড।

সূত্র: বিবিসি

এসএএইচ/টিটিএন