বরিশাল থেকে ময়মনসিংহ রুটে চলাচলকারী একমাত্র যাত্রীবাহী পরিবহন ‘শামিম এন্টারপ্রাইজ’। কয়েক বছর ধরে এ রুটে পরিবহনটি চলাচল করলেও গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর থেকে বাসটির চলাচল বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ উঠেছে নথুল্লাবাদ বাসমালিক গ্রুপ এবং জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের বিরুদ্ধে।
Advertisement
সবশেষ শনিবার রাতে যাত্রীসহ বাসটি একঘণ্টা আটকে রাখা হয় নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে। শামিম এন্টারপ্রাইজ কর্তৃপক্ষের দাবি, মালিক সমিতি মাসোহারা চায় এবং নতুন করে সমিতিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য চাপ দিচ্ছে। এ পর্যন্ত নথুল্লাবাদ বাসমালিক গ্রুপের সভাপতি মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে তিনদিন বাস আটকে রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে বাসের ম্যানেজার ও স্টাফদের হেনস্তা করা হয়েছে।
জানা গেছে, মোশাররফ বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ারের আপন ভাই। ৫ আগস্টের পরপরই নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের কর্তৃত্ব বিনা বাধায় দখল করেন তিনি। এরপর থেকে টার্মিনালে মোশাররফের বিরুদ্ধে নানাভাবে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠে। যদিও মহানগর বিএনপি ও শ্রমিক দলের দাবি, মোশাররফ হোসেন দলের কেউ নন।
শামিম এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার অলিউল ইসলাম সিকদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর শামিম এন্টারপ্রাইজ বরিশাল-ময়মনসিংহ রুটে যাত্রীসেবা দিচ্ছে। মালিক সমিতির বিগত সভাপতিরা কখনই এ পরিবহন চলাচলে বাধা দেননি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর মোশাররফ হোসেন বাসমালিক সমিতির সভাপতি হয়ে বাস চলাচল বাধাগ্রস্ত করছেন। এর সঙ্গে রয়েছেন জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি লিটন মীর ও সম্পাদক গোলাম মোস্তফা।’
Advertisement
তিনি আরও জানান, ‘মালিক সমিতি তার কাছে সাত হাজার টাকা করে মাসোহারা চেয়েছে। এছাড়া গাড়ি মালিক সমিতির অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে তাকে।’
এ প্রসঙ্গে নথুল্লাবাদ বাসমালিক গ্রুপের সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে যেভাবে গাড়ি চলেছে। এখন আর সেভাবে গাড়ি চলতে পারে না। মালিক সমিতির অনুমতি ছাড়া গাড়ি চলবে না।’
মাসোহারা দাবির প্রসঙ্গে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘শামিম এন্টারপ্রাইজ মালিক সমিতির সঙ্গে সম্পর্কও রাখবে না, অন্তর্ভুক্তও হবে না। এটা হতে পারে না। সমিতিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি লিটন মীর ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার মোবাইল নম্বরে কয়েকবার কল করা হলেও তাঁরা সাড়া দেননি।
Advertisement
বরিশাল বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির সিকদার বলেন, ‘দুই পক্ষকে বলা হয়েছে আগামী ১৫ তারিখ বসতে। তার আগ পর্যন্ত গাড়ি চলাচল করবে।’
বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, ‘যাত্রীসেবায় বাধা দেওয়া কোনোমতে ঠিক নয়। তাছাড়া মোশাররফ দলের কেউ নন।’
শাওন খান/আরএইচ/জেআইএম