বাংলাদেশের জাহাজ শিল্পসহ বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নে সিঙ্গাপুরকে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সিঙ্গাপুরে দেশটির ভারপ্রাপ্ত পরিবহন মন্ত্রী জেফ্রি সিওর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
Advertisement
নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের জাহাজ শিল্প খাতে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে এবং সব প্রক্রিয়া এখন স্বচ্ছতার সঙ্গে উন্মুক্ত মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। দেশের সম্ভাবনাময় জাহাজ শিল্প খাতসহ বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নে সিঙ্গাপুর বিনিয়োগ করতে পারে।
বৈঠকে সাখাওয়াত হোসেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে সিঙ্গাপুরের পরিবহন মন্ত্রীকে জানান এবং বন্দর অবকাঠামো নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা বিনিময় ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতায় সিঙ্গাপুরের সহায়তা কামনা করেন।
তিনি বলেন, বন্দর অবকাঠামো নির্মাণ ও ব্যবস্থাপনায় সিঙ্গাপুরের চমৎকার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের বিভিন্ন বন্দর, বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে শিপইয়ার্ড নির্মাণ, মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নসহ গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলোর অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে পারে।
Advertisement
উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের মেগা সম্প্রসারণ প্রকল্প বে টার্মিনাল নির্মাণে বাংলাদেশকে ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই টার্মিনাল নির্মিত হলে বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। বন্দরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে অনেকাংশে কমে আসবে আমদানি ও রপ্তানি ব্যয়।
উপদেষ্টা বে টার্মিনালের কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে পিএসএ সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আসন্ন অক্টোবর মাসের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর বা বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে একটি আন্তর্জাতিক মানের শিপইয়ার্ড বা ডকইয়ার্ড নির্মাণে সিঙ্গাপুর সরকারকে অনুরোধ জানান। সিঙ্গাপুরের পরিবহনমন্ত্রী এ বিষয়ে উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করেন।
বাংলাদেশের মেরিন একাডেমিগুলো থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ ও মেধাবী মেরিনারদের সিঙ্গাপুরে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ার জন্য তিনি সিঙ্গাপুর সরকারকে অনুরোধ করেন। এছাড়া বাংলাদেশি নাবিকদের জন্য সিঙ্গাপুর সরকার থেকে ট্রানজিট ভিসা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সিঙ্গাপুরের পরিবহনমন্ত্রী বাংলাদেশি নাবিকদের জন্য দ্রুতই ট্রানজিট বা ওয়ার্কিং ভিসা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান।
Advertisement
বাংলাদেশ ২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিলের ক্যাটাগরি ‘সি’-এর সদস্য হিসেবে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছে। আসন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থন কামনা করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
বৈঠকে উভয় দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এমআইএইচএস/জেআইএম