আইন-আদালত

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনে দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

নারায়ণগঞ্জে সাত খুনে দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি

গুমের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়া মামলায় নারায়ণগঞ্জের আরোচিত সাত খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত র‌্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাঈদ, মাসুদ রানা ও আরিফ হোসেনকে কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

Advertisement

প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৪ জুলাই) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, গুমের মামলায় তদন্তের স্বার্থে এই অনুমতি পেয়েছে তদন্ত সংস্থা এবং এর আগে গুমের বিষয়ে জবানবন্দি দেওয়ার সময়ে দণ্ডপ্রাপ্ত ওই তিন আসামি সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের নাম বলেছিলেন।

Advertisement

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এদিন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে ১১ আগস্ট।

আরও পড়ুন

সাবেক ডিএমপি কমিশনারসহ ৮ জনের বিচার শুরু

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের লিংক রোড থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ পাঁচজনকে অপহরণ করা হয়। বিষয়টি দেখে ফেলায় অপহরণের শিকার হন আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার গাড়িচালক মো. ইব্রাহিম। তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে ছয়জনের মরদেহ, পরদিন পাওয়া যায় আরেকজনের মরদেহ। নজরুল, চন্দন ও ইব্রাহিম ছাড়া হত্যার শিকার অন্য ব্যক্তিরা হলেন- নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম।

এ ঘটনায় হওয়া দুই মামলায় ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন নারায়ণগঞ্জের আদালত। এরপর বিচারিক আদালত থেকে ডেথ রেফারেন্স আসে উচ্চ আদালতে এবং রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা। হাইকোর্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল এবং অপর ১১ আসামির দণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ৯ আসামির দণ্ড বহাল থাকে। আসামিপক্ষ হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। এখনো তা নিষ্পত্তি হয়নি।

Advertisement

হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিদের মধ্যে তারেক সাঈদ ছাড়া রয়েছেন সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর (চাকরিচ্যুত) আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম এম রানা এবং সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা নূর হোসেন।

কারা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেমড সেলে আছেন তারেক সাঈদ। এম এম রানা আছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার–২–এ। আর আরিফ আছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার–৪–এ।

এফএইচ/ইএ/এমএস