দেশজুড়ে

মধুখালী মরিচ বাজারে কাঁচামরিচের মণ ১১ হাজার টাকা

মধুখালী মরিচ বাজারে কাঁচামরিচের মণ ১১ হাজার টাকা

ফরিদপুরে কাঁচামরিচের বাজারে হঠাৎ করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় মরিচ বাজার হাট-মধুখালী পৌর সদর বাজারে পাইকারি বাজারে প্রতিমণ মরিচ প্রকারভেদে ১০ হাজার ৫০০ থেকে ১১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর বিভিন্ন হাট-বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে।

Advertisement

সোমবার (১৪ জুলাই) মধুখালী পৌরসদরের মরিচ বাজার থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। অতি বৃষ্টিতে মরিচ গাছ মরে যাওয়ায় ও চাষিরা ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে বাজারে আনতে না পারায় আমদানি কমে গিয়ে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের কাঁচামরিচের বড় পাইকারি বাজার মধুখালী মরিচ বাজার। এখানে ৩২টি আড়তদার রয়েছেন। মধুখালী ছাড়াও বহরপুর, বালিয়াকান্দি, কানাইপুর, মাঝকান্দিসহ বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে মরিচ বিক্রি করতে আসেন চাষিরা। প্রতিদিন গড়ে ১০০০ থেকে ২০০০ হাজার মণ কাঁচা মরিচের আমদানি হয়।

খুচরা ক্রেতা মো. সাদ্দাম খন্দকার জাগো নিউজকে বলেন, কাঁচা মরিচের হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধিতে মরিচ চাষিরা লাভবান হলেও ভোক্তারা পড়েছেন বিপাকে। বাজার মনিটরিং ও দাম স্থিতিশীল রাখতে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

Advertisement

মধুখালীর রামদিয়া এলাকার মরিচ চাষি ফয়সাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, এবার পাঁচ বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করেছি। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে মরিচ গাছের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেক গাছ বৃষ্টিতে মরে গেছে।

মধুখালী পাইকারি বাজারের আড়তদার জনতা বাণিজ্যালয়ের মালিক মো. আলম শেখ জাগো নিউজকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অতিবৃষ্টির কারণে মরিচগাছ পানিতে তলিয়ে গেছে, অনেক চাষির গাছ মারা গেছে। ফলে বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। অন্যদিকে ব্যাপারীদের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় হঠাৎ করে মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সোমবার প্রতিমণ মরিচ প্রকারভেদে ১০ হাজার ৫০০ থেকে ১১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর বিভিন্ন হাট-বাজারে খুচরা দরে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মধুখালী মরিচ বাজার কমিটির সভাপতি মো. লিটন শেখ জাগো নিউজকে বলেন, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে মরিচের দাম বেশি। এখান থেকে ঢাকা, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে করে মরিচ রপ্তানি হচ্ছে। এখানে সাতক্ষীরা, যশোর, কালিগঞ্জ, মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মরিচ ক্রয় করতে আসেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। কৃষকের কাছ থেকে কেনার পর এক কেজি মরিচে সবমিলিয়ে ৭ টাকা খরচ হয়। গত কয়েকদিন ধরে হাটে কৃষকরা উৎপাদিত মরিচ নিয়ে আসলেও সরবরাহ ছিল তুলনামূলক কম। ফলে প্রতি মণ ৮ হাজার টাকার মরিচ ১১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়।

জানতে চাইলে মধুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুব এলাহী বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২৭২০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে ১৫০ হেক্টর আবাদ আক্রান্ত এবং ৫ হেক্টরের ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মরিচগাছে ফুল আসছে না, পরাগায়নও হচ্ছে না। ফলে ফলন কমে গেছে এবং বাজারে সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। যার কারণে দামও বেড়েছে।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, চলতি মৌসুমে শীতকালে যে মরিচ আবাদ করা হয়েছে তার পরিমাণ ছিল ৪৯৩ হেক্টর। আর বর্তমানে ৩১৭০ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের আবাদ করা হয়েছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে হঠাৎ দর বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃষ্টি কমলে পরিবেশ স্বাভাবিক হলে দাম স্বাভাবিক হবে।

এন কে বি নয়ন/এফএ/এমএস