আন্তর্জাতিক

পোকার হানায় নষ্ট হচ্ছে প্রাচীন গ্রন্থাগারের লক্ষাধিক বই

পোকার হানায় নষ্ট হচ্ছে প্রাচীন গ্রন্থাগারের লক্ষাধিক বই

হাঙ্গেরির সবচেয়ে ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হলো প্যাননহালমা আর্চঅ্যাবি গ্রন্থাগার। হাজার বছরের পুরোনো স্থাপনাটি ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য এবং হাঙ্গেরির অন্যতম প্রাচীন বিদ্যাপীঠ।

Advertisement

সেখানে শতাব্দীপ্রাচীন, হাতে বাঁধাই করা প্রায় এক লাখ বই সম্প্রতি গ্রন্থাগারের তাক থেকে নামিয়ে ফেলা হচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই—‘ড্রাগস্টোর বিটল’ নামে পরিচিত এক ধরনের ক্ষতিকর পোকা যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে। এই ক্ষুদ্র পোকাটি শুধু শুকনো খাবার নয়, বই বাঁধার জন্য ব্যবহৃত জেলাটিন ও স্টার্চ জাতীয় আঠাও খেয়ে ফেলে।

কিছুদিন আগে সাফাইয়ের কাজ করার সময় এই পোকার সংক্রমণের হদিস মেলে। প্রায় চার লাখ বইয়ের এক-চতুর্থাংশ এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন>>

Advertisement

পেরুতে ৩৫০০ বছরের প্রাচীন নগরীর সন্ধান টাইটানিকে বসে লেখা চিঠি বিক্রি হলো প্রায় ৫ কোটি টাকায় বাগানে পাওয়া ভাঙা ফুলদানি বিক্রি হলো ৮০ লাখ টাকায়

লাইব্রেরির কর্মীরা ধুলো জমা এবং বইয়ের মলাট ও পাতায় ছোট ছোট ছিদ্র খুঁজে পান—যা বিটলের আক্রমণের সুস্পষ্ট চিহ্ন।

এই প্রকল্পের প্রধান সংরক্ষক জ্সোফিয়া এডিত হাজদু বলেন, আমরা এত বড় পরিসরের সংক্রমণ আগে কখনো দেখিনি। আমাদের পুরো সংগ্রহ একসঙ্গে ঠিক করতে হবে।

এই গ্রন্থাগারে রয়েছে হাঙ্গেরির প্রথম বই তালিকা, একটি পূর্ণাঙ্গ ১৩শ শতাব্দীর বাইবেল, ১৯টি কডেক্স এবং ছাপাখানার আগের শত শত পাণ্ডুলিপি। যদিও সবচেয়ে ভঙ্গুর কিছু বই আলাদাভাবে সংরক্ষিত রয়েছে এবং নিরাপদ আছে, তবুও যেকোনো ক্ষতিই অত্যন্ত বেদনাদায়ক।

‘কোনো বই হয়তো প্রতিস্থাপনযোগ্য, কিন্তু তার সাংস্কৃতিক আত্মা প্রতিস্থাপনযোগ্য নয়,’ বলেন লাইব্রেরির পরিচালক ইলোনা আশভানি।

Advertisement

এখন প্রতিটি বইকে অক্সিজেনশূন্য নাইট্রোজেন-ভরা সিল করা ব্যাগে ছয় সপ্তাহের জন্য রাখা হচ্ছে, যাতে পোকাগুলো মারা যায়। এরপর প্রতিটি বই পরিদর্শন, পরিষ্কার এবং প্রয়োজন হলে পুনরুদ্ধার করা হবে।

কর্মকর্তারা সন্দেহ করছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বেড়ে যাওয়া তাপমাত্রাই হয়তো এই সংক্রমণকে বাড়িয়ে দিয়েছে। উষ্ণ পরিবেশে পোকামাকড়ের বংশবৃদ্ধি দ্রুত হয়, বলেন হাজদু।

প্যাননহালমার সন্ন্যাসী ও গ্রন্থাগারিকদের কাছে এই সংগ্রহ রক্ষা করা শুধু একটি দায়িত্ব নয়—এটি একটি পবিত্র কর্তব্য।

আশভানির কথায়, সেন্ট বেনেডিক্টের নিয়ম অনুযায়ী, মঠের সম্পত্তিকে পবিত্র হিসেবে বিবেচনা করতে হয়। আমরা সেই দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করি।

সূত্র: এপি, ইউএনবিকেএএ/