টানা তিনবার উইম্বলডন জয়ের সুযোগ ছিল কার্লোস আলকারাজের সামনে; কিন্তু শেষ ধাপে গিয়ে থমকে গেলেন এই স্প্যানিশ। উল্টো আলকারাজকে হারিয়ে প্রথমবার উইম্বলডন শিরোপা জিতে নিয়েছেন ইয়ানিক সিনার। সে সঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন, কেন তিনি বিশ্বের এক নম্বর।
Advertisement
ইতালির এই তারকা ফাইনাল জিতে নিয়েছেন ৪-৬, ৬-৪, ৬-৪, ৬-৪ গেমে। ছ’বার ফাইনালে উঠে এই প্রথম কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের শিরোপা হারালেন আলকারাজ। তিন ঘণ্টা চার মিনিটের লড়াই শেষে ঘাসের কোর্টে এই প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেন সিনার। ফরাসি ওপেনের ফাইনালে হারের বদলা নিলেন ইতালির এ তারকা।
ফরাসি ওপেনের ফাইনালেও সার্ভিস করতে গিয়ে এক সময় ৪০-০ এগিয়েছিলেন সিনার। সেখান থেকে তিনটি চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট বাঁচিয়ে ট্রফি নিয়ে গিয়েছিলেন আলকারাজ। কিন্তু উইম্বলডনে তার পুনরাবৃত্তি হল না। এ বারও ৪০-০ এগিয়ে থেকে সিনার একটি পয়েন্ট খুইয়েছিলেন আলকারাজের কাছে।
কিন্তু এমন একটা ‘এস’ সার্ভিস মারলেন যার কোনও জবাব ছিল না আলকারাজের কাছে। শিরোপা নিশ্চিত হতেই দু’হাত দু’পাশে ছড়িয়ে কিছুক্ষণ দর্শকদের অভিবাদন গ্রহণ করেন সিনার। এরপর হাঁটু মুড়ে র্যাকেটে মাথায় ভর দিয়ে কোর্টেই কিছুক্ষণ বসে থাকেন। দু’বার হাতের তালু দিয়ে কোর্টের ঘাস চাপড়েই চলে যান গ্যালারিতে কোচেদের কাছে।
Advertisement
২০০৬-২০০৮, টানা তিন বছর ফরাসি ওপেন এবং উইম্বলডন ফাইনাল খেলেছিলেন রজার ফেদেরার ও রাফায়েল নাদাল। এর মধ্যে ২০০৮-এর ফাইনাল শতাব্দীর সেরা টেনিস ম্যাচ হিসাবে ধরা হয়। সুরকির কোর্টের রাজা নাদাল হারিয়েছিলেন ঘাসের কোর্টের রাজা ফেদেরারকে।
আলকারাজ নিজেও এখনকার সুরকির কোর্টের রাজা। তবে সিনার ঘাসের কোর্ট নন, বরং স্বচ্ছন্দ হার্ডকোর্টে খেলতে। তার দু’টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের দু’টিই হার্ডকোর্টে। ফরাসি ওপেনের ফাইনালে উঠে হেরেছেন। তবে উইম্বলডনে সেই ভুল করলেন না। ভবিষ্যতে ফেদেরার বা জোকোভিচের জায়গা নেবেন কি না, তা সময় বলবে। তবে রোববার সিনারের আগ্রাসন এবং কৌশলী টেনিস বুঝিয়ে দিলো, আলকারাজ হয়তো আর উইম্বলডনে একচ্ছত্র দাপট দেখাতে পারবেন না। উইম্বলডনে আলকারাজের টানা ২৪টি ম্যাচ জেতার দৌড়ও এদিন থেমে গেল।
ম্যাচের পর সিনারকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন আলকারাজ। বলেন, `হারতে সব সময়ই খারাপ লাগে। ফাইনালে হার তো আরও বেদনাদায়ক। তবে ইয়ানিককে শুভেচ্ছা জানাতে চাই। ও এই ট্রফির যোগ্য। লন্ডনে গত দু’সপ্তাহে অবিশ্বাস্য টেনিস খেলেছে। তার দলেরও ধন্যবাদ প্রাপ্য। আমি জানি অনেকে তোমার দিকে তাকিয়েছিল। তাই তোমার জন্য খুব খুশি। কোর্টের বাইরেও তোমার সঙ্গে সম্পর্ক খুব ভাল। কোর্টেও একটা সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে।‘
পাল্টা আলকারাজের প্রশংসা করেন সিনারও। বলেন, `তোমার বিরুদ্ধে খেলা সব সময়েই কঠিন। ঠিকই বলেছো, কোর্ট এবং তার বাইরে আমাদের মধ্যে ভাল একটা সম্পর্ক রয়েছে। আমরা নিজেদের একটা পরিচিতি তৈরি করার চেষ্টা করছি। আশা করি ভবিষ্যতে তুমি এই ট্রফিটা অনেকবার হাতে তুলব। এখনই দুটো জিতে ফেলেছ।‘
Advertisement
আইএইচএস/