প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গত বছরের ১৮ জুলাই, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী যখন প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে হত্যাকাণ্ড চালায় তখন রক্তের ঘাটতি মেটাতে ‘রিদম ব্লাড ব্যাংক’ নামে ছোট্ট একটি ব্লাড ব্যাংক এগিয়ে এসেছিল। এ ব্লাড ব্যাংক ১৮ থেকে ২২ জুলাই আহতদের ১২০০ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করেছিল। এছাড়াও বহু চিকিৎসক ও নার্স স্বেচ্ছায় চিকিৎসা দিতে এগিয়ে আসেন। অনেকে নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে কাজ করেন। এখন এই সাহসী চিকিৎসক ও রক্তদাতাদের নিয়ে গভীর প্রতিবেদন প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
Advertisement
রোববার (১৩ জুলাই) ফেসবুকে তার ভেরিফাইড অ্যাকাউন্ট থেকে এক স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, আমি সম্প্রতি আমার ছেলেকে নিয়ে জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানেই আমার দেখা হয় মুনাদি আল ইসলামের সঙ্গে। মুনাদি একজন চিকিৎসক এবং জুলাই বিদ্রোহের একজন সক্রিয় অংশগ্রহণকারী। তিনি আমাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং খুব কম পরিচিত দিকের কথা বললেন — বিপ্লবের সময় সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে যে যুদ্ধটা চলেছিল, তার কথা।
১৮ জুলাই, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী যখন প্রথমবারের মতো বড় পরিসরে হত্যাকাণ্ড চালায়, তখন আহত ও শহীদ অনেক কর্মীকে নিয়ে যাওয়া হয় রাষ্ট্র পরিচালিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। জরুরি বিভাগে আহতদের চিকিৎসা চলতে থাকে। কেউ কেউ চিকিৎসা পান বেসরকারি বা অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে। তবে যারা গুরুতর আহত ছিলেন, তাদের সবাইকে শেষ পর্যন্ত পাঠানো হয় ডিএমসিএইচ-এ, কারণ জরুরি চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালটি সবচেয়ে সজ্জিত ছিল।
Advertisement
কিন্তু আহতদের স্রোতের মুখে পড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ রক্তের ব্যাগ ছিল না। শুরু হয় রক্তের খোঁজ। মুনাদি এবং আরেকজন চিকিৎসক আমাকে জানান, তখন দেশের কিছু নামকরা ব্লাড ব্যাংক রক্তের ব্যাগ দিতে অনাগ্রহ দেখায়। কেন তারা এগিয়ে আসেনি, সেটা পরিষ্কার নয়। আমি তাদের কারও সঙ্গেও কথা বলতে পারিনি। ফলে এই অনীহার কারণ আমি নিশ্চিত নই। মুনাদির ভাষ্য অনুযায়ী, তখন কিছু ব্যক্তি, এমনকি হিজড়া সম্প্রদায়ের কিছু মানুষও, এগিয়ে এসে ঢাকা মেডিকেলে রক্ত দান করেন।
তবুও তখনও রক্তের ঘাটতি ছিল। ঠিক এই সময়ে ‘রিদম’ নামে ছোট একটি ব্লাড ব্যাংক এগিয়ে আসে। তারা ১৮ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১২০০ ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে, এমনটাই জানালেন রিদমের একজন কর্মকর্তা। এছাড়াও বহু চিকিৎসক ও নার্স স্বেচ্ছায় চিকিৎসা দিতে এগিয়ে আসেন।
অনেকে নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে কাজ করেন। কারণ জরুরি বিভাগে তখন সাদা পোশাকে গোয়েন্দা বাহিনী ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা ভরে গিয়েছিল। পুলিশ চিকিৎসকদের carnage-এর কোনো ছবি তুলতে দেয়নি।
আমাদের এখন এই সাহসী চিকিৎসক ও রক্তদাতাদের নিয়ে গভীর প্রতিবেদন দরকার।
Advertisement
এমইউ/এমআইএইচএস/জেআইএম