দেশজুড়ে

আজও থামেনি মায়ের বিলাপ, আড়ালে চোখ মোছেন বাবা

আজও থামেনি মায়ের বিলাপ, আড়ালে চোখ মোছেন বাবা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীর সাইনবোর্ড এলাকায় গুলিতে মারা যাওয়া ফয়েজের স্মৃতি নিয়ে মা-বাবা এখনো কাঁদছেন। গত বছরের ২১ জুলাই সন্ধ্যায় স্যানেটারি কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ৩১ বছর বয়সী ফয়েজ। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়নের ঝাউডগি গ্রামে। ফয়েজ পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন।

Advertisement

শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে ফয়েজের বাড়িতে গেলে মা সবুরা বেগম সন্তান হারানোর ব্যথায় বিলাপ করে কাঁদতে থাকেন। এসময় মুখ আড়াল করে বাবা আলাউদ্দিন চোখের পানি মোছেন। তারা ফয়েজের ৩ বছর বয়সী সন্তান রাফির ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বিগ্ন।

মারা যাওয়ার আগে ফয়েজ মাকে ফোন করেছিলেন। কথার এক পর্যায়ে বলেছিলেন, ‘মা উপরে হেলিকপ্টার থেকে অনবরত গুলি হচ্ছে, পরে কথা বলবো।’ এটাই ছিল শেষ কথা।

পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিম্নবিত্ত সংসারে ফয়েজের জন্ম। কম বয়সেই কাজের উদ্দেশ্যে মালদ্বীপ যান তিনি। করোনার কারণে ২০২০ সালে চাকরি হারিয়ে বাড়ি ফিরতে হয় তাকে। পরিবারের হাল ধরতে চাকরি খুঁজতে তিনি ঢাকায় যান। সেখানে স্যানিটারি কাজ করেন। ফয়েজ গাজীপুরের টঙ্গীতে ভালোবেসে নুরনাহার বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের ৩ বছর বয়সী ছেলেও রয়েছে। তারা ঢাকার সাইনবোর্ড এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন।

Advertisement

প্রতিবেশী রফিক উল্যা বলেন, ফয়েজের আয় দিয়েই গ্রামে তাদের সংসার চলতো। বয়সের কারণে বাবা কোনো কাজ করতে পারে না। ছেলেকে হারিয়ে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে।

বাবা আলাউদ্দিন বলেন, আমার ছেলের নামে হায়দরগঞ্জ-ঝাউডগি সড়কের নামকরণ, বটতলীতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও কবরস্থানটি পাকাকরণের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি। এ কাজগুলো বাস্তবায়ন হলে ফয়েজ সম্পর্কে আগামী প্রজন্ম জানতে পারবে।

রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান খান বলেন, ফয়েজের পরিবারকে অর্থনৈতিকসহ সরকারি অন্য সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। রাস্তার নামকরণের বিষয়ে জেলা থেকে অনুমোদন হয়ে আসতে হয়। বিষয়গুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এফএ/এমএস

Advertisement