ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার এজবাস্টন টেস্টে অনফিল্ডে দারুণ পারফরম্যান্স করায় বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতকে প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন ভারতের জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে। এরপর লর্ডস টেস্টেও সৈকতকে অনফিল্ড আম্পায়ারের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
Advertisement
কিন্তু চলমান লর্ডস টেস্টের দ্বিতীয় দিনে সৈকতের সঙ্গে তর্কে জড়াতে দেখা গেছে ভারতীয় অধিনায়ক শুবমান গিলকে। কী এমন হয়েছে যে, আগের টেস্টের পছন্দের আম্পায়ারের ওপর অসন্তুষ্ট হলেন গিল?
মূলত, বল পরিবর্তন নিয়ে সৈকতের সঙ্গে বাক্য বিনিময় হয় গিলের। ইংল্যান্ডের জনপ্রিয় ডিউক ব্যান্ডের বলের আকার দ্রুত নষ্ট হয়ে গেছে দাবি করে সেটি পরিবর্তন করতে বলেছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক। তা নিয়েই সৈকতের সঙ্গে কথা হয় তার।
ডিউক ব্র্যান্ডের বলের নিম্নমান নিয়ে আম্পায়ারের কাছে অভিযোগ করেছিলেন গিল। এই অভিযোগ উঠেছিল গতকাল বৃহস্পতিবার ম্যাচের লর্ডস টেস্টের প্রথম দিনেই।
Advertisement
কিন্তু আজ শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে বিষয়টি আরও প্রকট হয়। গিলের সঙ্গে ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজও আম্পায়ারের সঙ্গে বলের মান নিয়ে তর্কে জড়ান।
"Not Every Time Ump" - The ball did change but Shubman Gill is furious about something. https://t.co/yuzRKImvFr pic.twitter.com/RS9vfXvfbu
— Kanav Bali (@Concussion__Sub) July 11, 2025প্রথম দিন ৮০ ওভার শেষে নতুন বল নেয় ভারত। কিন্তু শুক্রবার মাত্র ১০ ওভার পরই সেই বলের কন্ডিশন নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ভারতীয় খেলোয়াড়রা। বলের আকৃতি যাছাই পদ্ধতি বা হুপ টেস্টে উত্তীর্ণ না হওয়ায় বল পরিবর্তন করেন আম্পায়ার। এরপরও সমস্যার সমাধান হয়নি।
নিয়ম হচ্ছে, জরুরি কারণে যদি নির্ধারিত সময়ের (বিধি মোতাবেক ৮০ ওভার পর পর বল পরিবর্তন করা হয়) আগে বল বদলাতে হয়, তাহলে এমন বল খুঁজে নেওয়া হয়, যেটি পরিবর্তিত বলের কাছাকাছি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ যদি সমস্যমান বলটি দিয়ে ১০ ওভার খেলা হয়, তাহলে আম্পায়ার বোলিং দলের হাতে এমন বল তুলে দেন যা দিয়ে ১০ ওভার বা তার কাছাকাছি খেলা হয়েছে।
Advertisement
গিল নতুন বল নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ান। তাদের মতে, এই বল ১০ ওভারের চেয়ে অনেক বেশি ব্যবহার করা হয়েছে। এর আকৃতি ১০ ওভার ব্যবহার হওয়া বলের মতো নয়।
পাশেই থাকা সিরাজকে স্টাম্প মাইকে শোনা যায়, ‘এইটা ১০ ওভারের পুরনো বল? সিরিয়াসলি?’ কমেন্ট্রি বক্স থেকে ভারতীয় ক্রিকেটার সুনিল গাভাস্কার বলে ওঠেন, ‘এত দূর থেকেও দেখলে বোঝা যায় এটা ১০ ওভারের বল নয়, বরং ২০ ওভারের মতো লাগছে।’
যদিও আম্পায়ার তাদের অভিযোগ আমলে নেননি। এ আগে ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক রিশাভ পান্ত বলের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তার মতে, এতটা বিকৃত হওয়া ডিউক বল আগে কখনও দেখেননি।
পান্ত বলেন, ‘গেজ যেটা দিয়ে বল পরিমাপ করা হয় সেটা একই হওয়া উচিত, সেটা ডিউক হোক বা কোকাবুরা। তবে ছোট হলে ভালো হয় (হাসি)। বলগুলো অনেক ঝামেলা করছে। এটা একটা বড় সমস্যা। কারণ বল অনেক তাড়াতাড়ি আকার হারিয়ে ফেলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যা দেখছি, বল দ্রুত বিকৃত হয়ে যাচ্ছে। এমন আগে কখনও হয়নি। এটা খেলোয়াড়দের জন্য বিরক্তিকর কারণ প্রতিটি বল আলাদা আচরণ করছে। যখন বলটা নরম হয়ে যায়, তখন তেমন কিছুই করে না। আবার হঠাৎ বল বদলালে আচরণ একেবারে পাল্টে যাচ্ছে।’
‘একজন ব্যাটার হিসেবে বারবার মানিয়ে নিতে হয়। কিন্তু আমি মনে করি, এইভাবে বলের আচরণ ক্রিকেটের জন্য ভালো কিছু নয়’- যোগ করেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
এমএইচ/