বয়সের কারণে চুল-দাড়ি পেকে গেলে কলপ বা কালো রঙ ব্যবহার করে বয়স গোপন করা নাজায়েজ। হাদিসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, মক্কা বিজয়ের দিন আবু বকরের (রা.) বাবা আবু কুহাফাকে নিয়ে আসা হলে নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছিলেন, তার চুল কোনো রঙ ব্যবহার করে পরিবর্তন করে দাও, তবে কালো রঙ ব্যবহার করো না। (সহিহ মুসলিম: ২১০২)
Advertisement
অপর এক বর্ণনায় এসেছে, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমরা খেজাব ব্যবহারের মাধ্যমে বার্ধক্যের চিহ্ন পরিবর্তন করো। ইহুদিদের সাদৃশ্য অবলম্বন করো না। (অর্থাৎ চুল-দাঁড়িতে কালো ছাড়া অন্যান্য রঙ ব্যবহার করো। ইহুদিদের মতো চুল-দাড়ি পুরোপুরি সাদা রেখো না।) তবে কালো রঙের খেজাব ব্যবহার থেকে বিরত থাকবে। (সুনানে কুবরা, বায়হাকি: ৭/৩১১)
তবে কারো যদি অসুস্থতা কিংবা অন্য কোনো কারণে চুল পাকার বয়স হওয়ার আগেই চুল পেকে যায় তাহলে তার জন্য কালো রঙ ব্যবহার করা জায়েজ। যেহেতু তার ক্ষেত্রে কালো রঙ ব্যবহার করা বার্ধক্য গোপন করা বা প্রতারণা নয়।
ইমাম জুহরি (রহ.) বলেন, যখন আমাদের চেহারায় লাবণ্য ছিল (অর্থাৎ আমরা যুবক ছিলাম) তখন আমরা কালো রঙের খেজাব ব্যবহার করতাম। কিন্তু যখন চেহারা ম্লান হয়ে গেল ও দাঁত দুর্বল হয়ে পড়ল, তখন আমরা এটি ব্যবহার করা ছেড়ে দিয়েছি। (ফাতহুল বারি: ১০/৩৬৭)
Advertisement
ওপরে উল্লিখিত হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায়, ইসলামে চুল-দাঁড়িতে কালো ছাড়া অন্যান্য রঙ ব্যবহার করা নিষিদ্ধ নয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, চুল-দাঁড়িতে রঙ ব্যবহার যেন কাফেরদের অনুসরণের জন্য করা না হয় এবং মানুষের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট করে তাকে অদ্ভুত কোনো রূপ না দেয়। ইসলামে কাফেরদের অনুকরণ করে সাজসজ্জা গ্রহণ করা যেমন নিষিদ্ধ, স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট করে সঙ সাজাও নিষিদ্ধ।
এ ছাড়া চুলে ব্যবহৃত রঙ এমন হতে হবে যা চুলের ওপর পৃথক কোনো প্রলেপ তৈরি করে না, বরং চুলের সাথে মিশে যায়। কারণ রঙ যদি চুলের ওপর প্রলেপ তৈরি করে তাহলে, চুলে পানি না পৌঁছার কারণে তার অজু ও গোসল হবে না। অজুর সময় মাথা মাসাহ করা ফরজ, গোসলের সময়ও পুরো শরীরসহ চুল ধৌত করা ফরজ।
মেহেদির মতো যেসব রঙ চুলের ওপর পানির জন্য প্রতিবন্ধক আলাদা প্রলেপ তৈরি করে না, ওইসব রঙ চুলে লাগানো অবস্থায় গোসল ও অজু শুদ্ধ হবে।
ওএফএফ/এএসএম
Advertisement