রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অমীমাংসিত সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে গণশুনানি আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনুসসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) পাঠানো এ নোটিশে সংবিধান ও রাজনৈতিক সংস্কার সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এখনো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য না হওয়ায় গণশুনানির মাধ্যমে জনমত গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
নোটিশে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও বিবাদী হিসেবে রয়েছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রিয়াজ, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
নোটিশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট রিগ্যান লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখিত ঘটনার বিষয়ে বলেন, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গঠনমূলক পরিবর্তন আনার জন্য বিভিন্ন সংস্কার কমিশন কাজ করলেও কিছু মৌলিক বিষয়ে এখনো রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বিশেষ করে সংসদীয় ব্যবস্থার ভারসাম্য, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, রাজনৈতিক অর্থায়নের স্বচ্ছতা, ইলেকশন ক্যম্পেইন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং সংসদের জবাবদিহির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মতানৈক্য থেকেই গেছে।
Advertisement
এ অচলাবস্থার মধ্যে সুশাসন ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করে নোটিশে বলা হয়, এসব বিষয়ে সবার মতামত নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে গণশুনানি আয়োজন করা। এতে শুধু নাগরিক সমাজ নয়, শিক্ষক, ছাত্র, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।
সালাহ উদ্দিন রিগ্যান মনে করেন, গণশুনানির মাধ্যমে একদিকে যেমন সংস্কার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে, তেমনই রাজনৈতিক দলগুলোকেও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে বাধ্য করা যাবে। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সংস্কারই দীর্ঘমেয়াদে টিকবে না।
তার ভাষায়, গণতান্ত্রিক সমাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্রবিন্দুতে জনগণের অবস্থান থাকা উচিত। যে প্রক্রিয়ায় মানুষের মতামত, উদ্বেগ ও প্রত্যাশা প্রতিফলিত হবে না, সে প্রক্রিয়া কখনোই টেকসই হতে পারে না।
নোটিশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়, সাত কার্যদিবসের মধ্যে গণশুনানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নিলে তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন। এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট রিগ্যান বলেছেন, গণশুনানি আয়োজনের মাধ্যমে যদি সংস্কার পরিকল্পনায় জনস্বার্থ প্রতিফলিত না হয়, তবে আমি বাধ্য হবো রিট আবেদন করতে।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, আইনজীবী হিসেবে আমি শুধু পেশাগত দায়িত্ব পালনের বাইরে দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র এবং নাগরিক অধিকার সুরক্ষার স্বার্থেই এ নোটিশ দিয়েছি।
এফএইচ/এমকেআর/জিকেএস