ভরা মৌসুমেও উপকূলীয় ঝালকাঠি জেলার বিষখালী নদীতে দেখা মিলছে না রূপালী ইলিশের। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় উপজেলার কয়েকশো জেলে পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে।
Advertisement
মৎস্য অধিদপ্তর ও জেলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এক সময় বিষখালী নদীর তীরবর্তী ১২ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। ইলিশ আহরণের অভয়ারাণ্য ছিল বিষখালী নদী। বর্তমানে উপজেলার দুই হাজার জেলে পরিবার এর ওপর নির্ভরশীল। এসব জেলেরা বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও থেকে ঋণ এবং মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে দাদন নিয়ে নৌকা-জাল কিনে নদীতে নেমেছেন। কিন্তু দিনরাত নদীতে জাল ফেলেও ইলিশ না পেয়ে নিরাশ হয়ে ফিরছেন তারা।
জেলার আমুয়া বন্দর, কাঁঠালিয়া সদর, কচুয়া, সেন্টারের হাট ও আওরাবুনিয়া বাজারেও ইলিশের দেখা মিলছে কম। মাঝে মধ্যে দুই একজন জেলের জালে দুই একটি মাছ ধরা পড়লেও বাজারে তার দাম আকাশ ছোঁয়া। যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাহিরে।
এদিকে অন্য কোনো আয়ের উৎস না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন ওই সব জেলে পরিবার। তাদের পরিবার প্রায়ই অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।
Advertisement
উপজেলার বড় কাঁঠালিয়া গ্রামের জেলে ফারুক হোসেন বলেন, নদীতে এখন আর আগের মতো ইলিশ পাওয়া যায় না। বাপ-দাদার পেশা ছাড়তেও পারছি না।
ফারুকের ছোট ভাই সেন্টু জানান, কয়েক বছর ধরে নদীতে মাছ না পাওয়ায় সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছিল। তাই বাধ্য হয়ে পেশা পরির্বতন করেছি। এখন কাঁঠালিয়া থানার সামনে চায়ের দোকান করি।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্যুরো বাংলাদেশ’র উপজেলা শাখা ব্যবস্থাপক মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, ছোট একটা চাকরি করে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালাতে এমনিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপর আবার চড়া মূল্যের ইলিশ মাছ কিনে খাবো কীভাবে। বর্তমান বাজারে স্থানীয় নদীর ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫০০-২০০০ টাকা।
আমুয়া বাজারের মাছ ব্যবসায়ী নুরু সরদার জানান, বিষখালী নদীর পানি মিষ্টি, তাই এ নদীর ইলিশ সুস্বাদু। এই মাছের দামও বেশি। এখনতো ইলিশ মাছ পাওয়াই যায় না।
Advertisement
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার জানান, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে নদীতে মাছ কম। আমাবশ্যার গোনের পর থেকে আরও বেশি ইলিশ ধরা পড়তে পারে।
মো. আতিকুর রহমান/এফএ/এএসএম