ধর্ম

বিতর নামাজে দোয়া কুুনুতের সঙ্গে দরুদ পড়া কি মুস্তাহাব?

বিতর নামাজে দোয়া কুুনুতের সঙ্গে দরুদ পড়া কি মুস্তাহাব?

বিতর অর্থ বিজোড়। বিতর নামাজের রাকাত বিজোড় সংখ্যক বিধায় এটিকে বিতর নামাজ বলা হয়। ইশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত বিতর পড়া যায়। প্রতিদিন এ সময়ের মধ্যে বিতর নামাজ পড়া ওয়াজিব।  

Advertisement

বিতর নামাজে অন্যান্য নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়ে প্রথম বৈঠকে বসে তাশাহহুদ পড়তে হয়। তৃতীয় রাকাত পড়ার জন্য উঠে দাঁড়িয়ে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য কোনো সুরা বা আয়াত পড়ার পরপর তাকবির বলে দুহাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বাঁধতে হয় এবং দোয়া কুনুত পড়তে হয়। তারপর অন্যান্য নামাজের মতো রুকু, কাওমা, সিজদা করে শেষ বৈঠকে বসতে হয় এবং তাশাহুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে বিতর নামাজ শেষ করতে হয়। 

বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে দোয়া কুনুতের সঙ্গে দরুদ পড়া মুস্তাহাব। তাই কেউ চাইলে দোয়া কুনুতের সঙ্গে দরুদ পড়তে পারে এবং দোয়া কুনুতের সঙ্গে ভুল করে বা ইচ্ছাকৃত দরুদ পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, দোয়া কুনুতের সঙ্গে দরুদ পড়লেও শেষ বৈঠকে আবার দরুদ পড়তে হবে। শেষ বৈঠকে দরুদ পড়া পৃথক সুন্নত যা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ।

অর্থ ও উচ্চারণসহ দোয়া কুনুত

Advertisement

اللّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِيْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ، وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ، اللّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ، وَلَكَ نُصَلِّيْ وَنَسْجُدُ، وَإِلَيْكَ نَسْعٰى وَنَحْفِدُ، نَرْجُو رَحْمَتَكَ وَنَخْشٰى عَذَابَكَ، إِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাইনুকা ওয়া নাসতাগফিরুকা ওয়া নুমিনুবিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুসনি আলাইকাল খাইর ওয়া নাশকুরুকা ওয়া লা নাকফুরুকা ওয়া নাখলাঊ ওয়া নাতরুকু মাইঁইয়াফজুরুকা আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না'বুদু ওয়া লাকা নুসাল্লি ওয়া নাসজুদু ওয়া ইলাইকা নাসআ ওয়া নাহফিদু নারজু রাহমাতাকা ওয়া নাখশা আজাবাকা ইন্না আজাবাকা বিলকুফফারি মুলহিক্ব।

অর্থ: হে আল্লাহ! আমরা আপনারই সাহায্যপ্রার্থী এবং একমাত্র আপনার কাছেই ক্ষমাপ্রার্থী। আপনার উপর আমরা ইমান এনেছি এবং আপনার ওপরই ভরসা করি, আপনার উত্তম প্রশংসা করি, আপনার শোকর আদায় করি, আপনার প্রতি অকৃতজ্ঞ হই না, যারা আপনার নাফরমানি করে, তাদেরকে পরিত্যাগ করি এবং তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করি। হে আল্লাহ! আমরা আপনারই ইবাদাত করি, আপনার জন্যই নামাজ পড়ি এবং আপনার জন্যই সিজদা করি, আপনার দিকেই ধাবিত হই, আপনার হুকুম পালনের জন্যই প্রস্তুত থাকি, আপনার দয়ার আশা করি, আপনার শাস্তিকে ভয় পাই। নিঃসন্দেহে আপনার শাস্তি ভোগ করবে কাফির সম্প্রদায়।

দোয়া কুনুত মুখস্ত না থাকলে কী করবেন? 

Advertisement

দোয়া কুনুত একটি বড় দোয়া হওয়ার কারণে অল্পবয়সী বা বৃদ্ধ বয়সী অনেকে দোয়াটি মুখস্ত রাখতে পারে না। এ রকম ক্ষেত্রে দোয়া কুুনুত মুখস্ত করার চেষ্টা করতে হবে। মুখস্ত না হওয়া পর্যন্ত তৃতীয় রাকাতে সুরা-কেরাতের পর তাকবির দিয়ে দোয়া কুনুতের জায়গায় কোরআন হাদিসে বর্ণিত সহজ কোনো দোয়া পড়বে। যেমন- 

رَبّنَا آتِنَا فِي الدّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النّارِ.

উচ্চারণ: রাব্বানা আতিনা ফিদ-দুনয়া হাসানাহ ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাহ ওয়া কিনা আজাবান-নার। 

অর্থ: হে আমাদের রব, আমাদের দুনিয়াতে কল্যণ দান করুন, আখেরাতেও কল্যাণ দান করুন এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন।

অথবা তিনবার বলবে, ‘আল্লাহুম্মা-গফিরলি’ অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করুন!’

ওএফএফ/জিকেএস