চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) শ্রমিক থেকে প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দেওয়ার ঘটনায় দুদকের অভিযানের একদিনের মাথায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শেখ তৌহিদুল ইসলামকে অপসারণের দাবি ওঠেছে। তাকে ‘আপাদমস্তক দুর্নীতিবাজ, কমিশন বাণিজ্যের মূলহোতা, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি করা হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে সংস্থাটির কার্যালয়ের নিচে ‘সচেতন চট্টগ্রামবাসী’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এসময় মানববন্ধনকারীদের হাতে ‘গো তৌহিদ গো’, ‘সিইও শেখ তৌহিদুল ইসলামের অপসারণ চাই’-সহ নানা প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে।
জানা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে যোগ দেন শেখ তৌহিদুল ইসলাম। তখন মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত রেজাউল করিম চৌধুরী।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, চসিক সিইও শেখ তৌহিদুল ইসলাম পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। তিনি কমিশন বাণিজ্যের মূলহোতা এবং দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
Advertisement
এদিকে বিক্ষোভের একপর্যায়ে করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বিক্ষোভস্থলে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের কোনো দাবি থাকলে লিখিতভাবে দিন, আমরা মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করবো। তবে দয়া করে পরিবেশ শান্ত রাখুন এবং কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করবেন না।’
আন্দোলনকারীরা জানান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ হয়েছে। তিনি দুই দিনের সময় চেয়েছেন এবং এর মধ্যে সিদ্ধান্ত না এলে আন্দোলন আরও কঠোর হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিক্ষোভকারীরা।
অভিযোগ ও কর্মসূচি প্রসঙ্গে জানতে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক তরুণ বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তার কিছু দোসর এখনো রয়ে গেছে। তাদের একজন শেখ তৌহিদুল ইসলাম। নামের আগে শেখ, তিনি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ঠিকাদারি সিন্ডিকেট চলছে।’
Advertisement
আরেক আন্দোলনকারী বলেন, ‘তাকে টাকা না দিলে কোনো ফাইল নড়ে না। আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদের তিনি প্রকাশ্যে পৃষ্ঠপোষকতা দেন। তাই আমরা তার দাপ্তরিক অপসারণ চাই।’
বিক্ষোভকারীরা আরও জানান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে শেখ তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানান অভিযোগ আগে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে তদন্তের কথাও উঠেছিল, তবে এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাদের দাবি, তাকে কমিশন না দিলে কোনো প্রকল্পে কাজ পাওয়া যায় না। অথচ তিনি এখনো ওই পদে বহাল রয়েছেন।
রফিক হায়দার/এমকেআর/এএসএম