দেশজুড়ে

এক কলেজে ৩ অধ্যক্ষ, ব্যাহত পাঠদান

এক কলেজে ৩ অধ্যক্ষ, ব্যাহত পাঠদান

নীলফামারীর জলঢাকায় এক কলেজে অধ্যক্ষ দাবিদার তিন শিক্ষক। এদের মধ্যে একজন শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত। অপর দুজন ভারপ্রাপ্ত। উপজেলার শিমুলবাড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিন অধ্যক্ষের রশি টানাটানিতে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৮ আগস্ট কলেজটি জাতীয়করণ হয়। জাতীয়করণের সময় থেকে সেখানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন উপাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান। এরপর চলতি বছরের ৮ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সরকারি কলেজ শাখা-২ এর আদেশে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান ক্যাডারভুক্ত অধ্যাপক এ কে এম সিদ্দিকুর রহমান। তার পদায়নের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট হলে ওই (পদায়ন) আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নানকে দায়িত্ব পালনের আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সিদ্দিকুর রহমান আদালতের সেই আদেশ অমান্য করে নিয়মবহির্ভূতভাবে শুধু কাগজ-কলমে কলেজের অন্য সহকারী অধ্যাপক অশোক কুমার রায়কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি নিয়মিত কলেজে আসছেন এবং অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে এই তিন অধ্যক্ষই কর্মরত কলেজটিতে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে জেলা শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২০২১ সালের ৮ আগস্ট শিমুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজটি জাতীয়করণ হয়। তখন থেকে তিনি বিধিমালা অনুযায়ী কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন।

২০১৮ সালের আত্তীকরণ বিধিমালা অনুযায়ী, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার নন-ক্যাডারে পদায়নের বিধান নেই। সে অনুযায়ী তার পদায়ন যৌক্তিক রয়েছে। তারপরও বিধি ভঙ্গ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের ঘাপটি মেরে থাকা দোসররা শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে হঠাৎ করে চলতি বছরের ৮ এপ্রিল ১৩৫ কলেজের সঙ্গে শিমুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজে ক্যাডারভুক্ত এ কে এম সিদ্দিকুর রহমানকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন। ১৭ এপ্রিল তিনি কলেজে যোগদান করেন।

Advertisement

ওই আদেশ বাতিল চেয়ে গত ২৭ মে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন আব্দুল হান্নান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১ জুন অধ্যক্ষ পদায়ন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে তার পক্ষে রায় দেন আদালত। ওই আদেশের পর এ কে এম সিদ্দিকুর রহমান তাকে দায়িত্ব না দিয়ে অবৈধভাবে কলেজের একজন সহকারী অধ্যাপক অশোক কুমার রায়কে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছেন, যা বিধি অনুযায়ী হয়নি বলে দাবি করেন আব্দুল হান্নান।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকারী অশোক কুমার রায়ের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কলেলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তার পদায়ন তিন মাসের জন্য স্থগিত করায় কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তিনি সহকারী অধ্যাপক অশোক কুমার রায়কে দায়িত্ব দিয়েছেন।

সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নানকে দায়িত্ব না দিয়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে অশোক কুমার রায়কে দায়িত্ব দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আব্দুল হান্নান কলেজে অনুপস্থিত থাকার কারণে অশোক কুমার রায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

Advertisement

আমিরুল হক/এসআর/এএসএম